পাঁচ দিনের লক্ষ্য নিয়েই শুরু হয়েছিল কানপুর টেস্ট। কিন্তু ম্যাচের প্রথম দিন থেকেই বৃষ্টির আক্রমণ চলতে থাকে। ফলে প্রথম দিনে মাত্র ৩৫ ওভার খেলা হতে পেরেছিল। তার মানে এক সেশনের সামান্য একটু বেশি। এরপর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দিনে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। বাকি ছিল দুদিন। পঞ্চম দিনে খেলা হয়েছে দেড় সেশনের মত। তার মানে কানপুরে মোট খেলা হয়েছে সাড়ে পাঁচ সেশনের মত। অর্থাৎ দুই দিনেরও কম। আর সে দুইনেরও কম সময়ে বাংলাদেশ দল হেরেছে টেস্ট ম্যাচ। ব্যাটসম্যানদের চরম ব্যর্থতায় আরো একটি লজ্জাজনক হার বরণ করতে হলো বাংলাদেশ দলকে। কানপুর টেস্টে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ ২–০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে ভারত। সে সাথে হোয়াইট ওয়াশ করেছে টাইগারদের। এ নিয়ে ৯টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজের ৮টি জিতল ভারত। আর পঞ্চমবার বাংলাদেশকে হোয়াইট ওয়াশ করল ভারত।
ভারতের মাঠে ব্যাটিংটা যেন ভুলেই গিয়েছিল বাংলাদেশের ব্যাটাররা। কানপুরে প্রথম ইনিংসে কোনমতে ২৩৩ রান করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে করতে পেরেছে মাত্র ১৪৬ রান। আর তাতে ভারতের সামনে ৯৫ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায়। যা একেবারে অনায়াসেই ছুঁয়ে ফেলে ভারত। বৃষ্টিতে আড়াই দিনের বেশি ভেসে যাওয়ার পরও দুর্দান্ত বোলিং ও আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে জয় আদায় করে নিল ভারত। শেষ দিনের অর্ধেক সময় তখনও বাকিই ছিল। ম্যাচের চার ইনিংসে খেলা হয়েছে মোট ১৭৩.২ ওভার। সব মিলিয়ে তাই বলা যায় এই টেস্টে খেলা হয়েছে দুই দিনেরও বেশ কম সময়। আগের দিনের ২ উইকেটে ২৬ রান নিয়ে গতকাল শেষ দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। আর শুরুতেই হারায় প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মোমিনুল হককে। সেই ধাক্কা সামলে ৫৫ রানের জুটি গড়েন সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু রাবিন্দ্র জাদেজার দ্বিতীয় বলেই রিভার্স সুইপে শান্ত উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার পর ধসের শুরু। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর বিদায় নেন শান্ত।
এরপর লিটন দাস ফিরেন ২ রান করে। আর সাকিব আল হাসান ফিরেন রানের খাতা খোলার আগেই। ৯৪ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর মুশফিকুর রহিম চেষ্টা করেছিলেন দলকে টেনে নেওয়ার। কিন্তু কাজে দেয়নি সেটা। একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করে যাওয়া মুশফিকুর রহিম শেষ পর্যন্ত বোল্ড হন লাঞ্চের আগের ওভারের শেষ বলে। ৬৩ বলে ৩৭ রান করেন মুশফিক। ৫৫ রানের মধ্যে শেষ ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ভারতের পক্ষে জাসপ্রিত বুমরাহ, রবি চন্দ্রন অশ্বিন এবং রবীন্দ্র জাদেজা প্রত্যেকে নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট।
জয়ের জন্য ৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তৃতীয় ওভারেই ফিরেন রোহিত শর্মা। ৭ বলে ৮ রান করা রোহিত মিরাজের বলে ক্যাচ দেন হাসান মাহমুদের হাতে। নিজের পরের ওভারে শুভমান গিলকে ফেরান মিরাজ। ১০ বলে ৬ রান করা গিল ফিরেন এলবিডব্লিউ হয়ে। এরপর ব্যাট হাতে রীতিমত ঝড় তোলেন ওপেনার জসওয়াল এবং বিরাট কোহলি। দলকে ৯২ রানে পৌঁছে দিয়ে বিচ্ছিন্ন হন দুজন। ৪৫ বলে ৫১ রান করে তাইজুলের বলে সাকিবের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ইয়াসাসাভি জসওয়াল। বিরাট কোহলি অপরাজিত থাকেন ৩৭ বলে ২৯ রান করে। মাত্র ১৭.২ ওভারে জয় নিশ্চিত করে ফিরে ভারত। দুই ইনিংসে ঝড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা জসওয়াল। আর চেন্নাইয়ের সেঞ্চুরি ও সিরিজে ১১ উইকেট নিয়ে সিরিজর সেরা রবিচন্দ্রন অশ্বিন। দুই দল এখন খেলবে তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজ। আগামী রোববার গোয়ালিয়রে শুরু হবে এই সিরিজ।