দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) করা মামলায় দণ্ডিত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। গতকাল ঢাকার ২ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক এ মেয়র। এ সময় বিচারক এ এস এম রুহুল ইমরান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এদিকে এক বিবৃতিতে মীর নাছিরের মুক্তি দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই দাবি করেছে চট্টগ্রাম মহাগর বিএনপি। সাবেক প্রতিমন্ত্রী মীর নাছির ও তার ছেলে মীর হেলালের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর গুলশান থানায় অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুদক। একই বছরের ৪ জুলাই রায়ে মীর নাছিরকে ১৩ বছর এবং মীর হেলালকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। গত ২৭ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করলে মীর হেলালকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্ত হন তিনি।
জানা গেছে, ২০০৭ সালে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন মীর নাছির ও মীর হেলাল। ২০১০ সালের ১০ আগস্ট মীর নাছিরের এবং একই বছরের ২ আগস্ট মীর হেলালের সাজা বাতিল করে রায় দেয় হাই কোর্ট। হাই হাই কোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাই কোর্টেই বিচার করার নির্দেশ দেয়। এরপর শুনানি শেষে গত বছরের ১৯ নভেম্বর নিম্ন আদালতের সাজা বহাল রেখে রায় দেয় হাই কোর্ট। হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি। ১৫৯ পৃষ্ঠার এ রায়ে তাদের রায়ের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছিল। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করলে সে আবেদন খারিজ করে দেয়।
বিএনপির প্রতিবাদ : মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনকে কারাগারে প্রেরণের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আলী আব্বাস ও সদস্য সচিব মোস্তাক আহমদ খান।
গতকাল এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীনকে ওয়ান ইলেভেনের সরকারের দায়ের করা মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেফতার করে সরকার তাদের নীল নকশার চরিত্র আবারো ফুটিয়ে তুলেছে। ওয়ান ইলেভেন সরকার রাজনীতি ধ্বংস করার জন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের নামে মিথ্যা হয়রানি মামলা দায়ের করে বাংলাদেশের রাজনীতি ধ্বংস করতে চেয়েছে। কিন্তু আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের নেতাদের নামে দায়ের হওয়া সকল মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করলেও বিএনপির নেতাদের হয়রানি করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তা সচল রেখেছেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় শুধু বিএনপির নেতাদের নামে মামলা হয়নি আওয়ামীলীগ সভানেত্রীর বিরুদ্ধেও হয়েছিল। সেটা তারা ভুল গিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে তাদের মামলা প্রত্যাহার করে বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠাচ্ছে।