চিত্রনায়িকা পরীমনিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডে পাঠানোর ক্ষেত্রে ঢাকার দুই মহানগর হাকিমকে ফের ব্যাখ্যা দিতে বলেছে হাই কোর্ট। আগামী ২৪ অক্টোবর পরবর্তী আদেশের জন্য রেখে ওই সময়ের মধ্যে তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা হাই কোর্টকে জানাতে বলা হয়েছে। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল বুধবার এ আদেশ দেয়। খবর বিডিনিউজের। দুই হাকিমের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও আব্দুল আলিম মিয়া জুয়েল। আইন সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান।
বনানী থানার মাদকের মামলায় পরীমনিকে দ্বিতীয় দফায় দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছিলেন ঢাকার মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস। পরে একই মামলায় মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম তৃতীয় দফায় আরও এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কী কী তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে পরীমনিকে শেষ দুই দফা রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছিল, দুই হাকিমের কাছে সেই ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিল হাই কোর্ট।
জামিন সংক্রান্ত রুল ও রিমান্ডের বৈধতা প্রশ্নে স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারির এক আবেদনের শুনানিতে হাই কোর্টের এই বেঞ্চ গত ২ সেপ্টেম্বর সেই আদেশ দেয়। দুই হাকিমকে ১০ দিনের মধ্যে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। সেই সাথে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মামলার নথিসহ (কেস ডকেট) আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। পরীমনিকে শেষ দুই দফা রিমান্ডে নেওয়ার বিষয়ে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলা হয়। নির্দেশ অনুযায়ী তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৫ সেপ্টেম্বর মামলার নথি নিয়ে হাজির হন। মার্জনা চেয়ে দুই মহানগর হাকিমের জমা দেওয়া লিখিত ব্যাখ্যাও সেদিন আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
দুই হাকিমের ব্যাখ্যায় উষ্মা প্রকাশ করে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক মোস্তফা জামান ইসলাম সেদিন বলেছিলেন, রিমান্ড নিয়ে হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের যে গাইডলাইন এবং আমাদের প্রচলিত আইন আছে, তারা এগুলোর বিরুদ্ধে। যে কারণে আমরা তাদের জবাবে আমরা সন্তুষ্ট নই। যে কারণে পরবর্তী আদেশের জন্য ২৯ সেপ্টেম্বর তারিখ রাখলাম।
সে অনুযায়ী মঙ্গলবার বিষয়টি আদেশের জন্য উঠলে দুই মহানগর হাকিমের আইনজীবী আব্দুল আলিম মিয়া জুয়েল আদালতকে বলেন, আপনারা গত ২ সেপ্টেম্বর আমাদের কাছে ব্যাখ্যা তলব করেছিলেন। আমরা সেই ব্যাখ্যা রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে আপনাদের কাছে দাখিল করেছি। আপনার হস্তগত হয়েছে। কি কারণে দিয়েছি সে কারণগুলো বলেছি। এ সময় তাকে থামিয়ে দিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আদালতকে বলেন, দুজনই আমার কাছে এসেছিলেন, দুজনই ইয়াং অফিসার। দুজনই অনুতপ্ত, দুঃখিত। ট্রেনিংয়ের অভাবে প্রপারলি রিপ্লাইটা (ব্যাখ্যা) লেখা হয় নাই। উনারা ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন আপনাদের কাছে।
বিচারক মোস্তফা জামান ইসলাম তখন বলেন, ঠিক আছে, আরেকটা রিপ্লাই দিক। আমরা সময় দিই। আগামী ২৪ অক্টোবর পরবর্তী আদেশের জন্য রাখছি। আইন সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী জেডআই খান পান্না তখন বলেন, হ্যাঁ, আরেকটা রিপ্লাই দিক। কারণ সুপ্রিম কোর্টের আদেশ-নির্দেশনা (রিমান্ড নিয়ে) আছে। সেটা মানতে হবে। এরপর আদালত আগামী ২৪ অক্টোবর বিষয়টি পরবর্তী আদশের জন্য রেখে এই সময়ের মধ্যে দুই হাকিমকে ফের ব্যাখ্যা দিতে বলে।