দুই সপ্তাহে কেজিতে এলাচের দাম বাড়ল ১ হাজার টাকা

লাগামহীন স্লিপ বাণিজ্য বাইরে ডেলিভারি হয় না, কেবল গুদাম পরিবর্তন হয়

জাহেদুল কবির | সোমবার , ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ at ৮:০৫ পূর্বাহ্ণ

খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে এলাচ নিয়ে ফের চলছে লাগামহীন ‘স্লিপ বাণিজ্য’। সাদা কাগজে এলাচের নাম ও দাম লিখে এই অনিয়ন্ত্রিত বাণিজ্যের ফলে গত দুই সপ্তাহে পণ্যটির দাম কেজিতে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাইরে এক কেজি এলাচও ডেলিভারি না করে কেবল নিজেদের মধ্যে ট্রেডিং বা হাতবদল করে গরম মসলার বাজার অস্বাভাবিক করে তুলছেন এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী। এদের বেশিরভাগই খাতুনগঞ্জে তেলচিনি ও গমের স্লিপ বেচাকেনায় জড়িত। খাতুনগঞ্জের মসলা ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে ব্যবসায়ীদের এক কেজি পণ্যও বাইরে বেচাকেনা হয়নি। কিছু ভ্রাম্যমাণ মৌসুমী ব্যবসায়ী ও এক শ্রেণীর অসাধু মসলা ব্যবসায়ী ডিও (ডেলিভারি স্লিপ) বেচাকেনার মাধ্যমে ইচ্ছেমতো বাজার ওঠানামা করাচ্ছেন, যা প্রকৃত মসলা ব্যবসায়ীদের ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছে। জানা গেছে, ঈদের ছুটির পর প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৯০০ টাকায়।

গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বর্তমানে সেই এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৯২০ টাকায়। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে প্রায় সব ধরনের মসলা আমদানি করতে হয়। এলাচ আসে গুয়েতেমালা থেকে। বাকি সব পণ্য ভারত থেকেও আসে। তবে এটা ঠিক, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে গরম মসলার বুকিং দর বেড়েছে। বাজার চাহিদা এবং মসলার মজুদ হিসেব করলে এই মুহূর্তে দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।

খাতুনগঞ্জের একাধিক মসলা ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, খাতুনগঞ্জের এক শ্রেণীর ডিও বা স্লিপ ব্যবসায়ী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পণ্য নিয়ে এক প্রকার জুয়া খেলেন। তারা নিজেদের মধ্যে টেডিং করে ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম ওঠানামা করান। দেখা যাচ্ছে, বাজারে যে পরিমাণ এলাচ মজুদ রয়েছে, তার চেয়ে বেশি স্লিপ বিক্রি হচ্ছে। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায় তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করেন। এদের কেউই প্রকৃত মসলা ব্যবসায়ী নন। দিনে যে পরিমাণ এলাচ কেনাবেচা হয়, এর মধ্যে এক কেজিও বাইরে ডেলিভারি হয় না। এসব পণ্য কেবল গুদাম পরিবর্তন হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন এলাচ আমদানিকারক বলেন, খাতুনগঞ্জে নতুন এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৪০০ টাকায়। অথচ গত বছরের পুরনো এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৯২০ টাকায়। নতুন এলাচের দাম বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু এখানে নতুন এলাচ নিয়ে ট্রেডারদের আগ্রহ নেই। তারা শুধুমাত্র হুজুগের বসে পুরনো এলাচ নিয়ে কারসাজিতে মেতে রয়েছেন।

খাতুনগঞ্জের মসলা আমদানিকারক হাজী জসিম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন বলেন, স্লিপ ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যের কারণে এলাচের বাজার লাগামহীন হয়ে পড়েছে। এখানে যে বাজার চাহিদা আছে তা নয়। এদের বেশিরভাগই আবার প্রকৃত ব্যবসায়ী নন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপত্রলেখক এম এ গফুরের ইন্তেকাল
পরবর্তী নিবন্ধজুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী নিপা জেলা পরিষদ সদস্য নির্বাচিত