দুই বছর পর হেফাজতের কমিটিতে ফিরলেন রাজনীতিকরা

| শুক্রবার , ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

ধর্মভিত্তিক দলের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজন রাজনীতিক ‘অরাজনৈতিক সংগঠন’ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ফিরে এসেছেন। ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনের সময় সহিংসতার পর তাদেরকে বাদ দিয়ে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠনটির কমিটি করা হয়েছিল। তবে দুই বছর আগের ঘটনায় তুমুল আলোচিত কারাবন্দি নেতা মামুনুল হকের ঠাঁই হয়নি নতুন কমিটিতেও। কমিটিতে ফিরেছেন হেফাজতের প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর বড় ছেলে ইউসুফ মাদানি। জায়গা পেয়েছেন ইসলামী ঐক্যজোটের প্রয়াত নেতা মুফতি ফজলুল হক আমিনীর জামাতা মাওলানা সাখাওয়াত রাজীও। খবর বিডিনিউজের।

দুই বছর আগে সহিংসতার মামলার আসামি ও নেজামে ইসলামের নেতা হারুন ইজাহার ও আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামীর নেতা আবদুর রব ইউসুফী ও জুনায়েদ আল হাবিব, খেলাফত মজলিসের নেতা সাখাওয়াত হোসাইন, শোয়ায়েব জমিরিসহ আরও বেশ কয়েকজন রাজনীতিক ফিরেছেন কমিটিতে। তবে গত দুই বছরে হেফাজতের এই রাজনীতিক নেতাদের রাজনৈতিক অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে। কট্টর সরকারবিরোধী অবস্থান থেকে কেউ কেউ সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও গড়ে তুলেছেন। কেউ কেউ অবশ্য আগের অবস্থানেই আছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ফটিকছড়ি উপজেলার বাবুনগর মাদ্রাসায় হেফাজতের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী নতুন এই পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করেন বলে জানান সংগঠনের প্রচার সম্পাদক মুফতি কেফায়াতুল্লাহ আজহারী। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে গঠিত ১২ সদস্যের সাব কমিটি আজ (গতকাল) আমীরে হেফাজতের কাছে নতুন করে কমিটির পদায়নসহ ২১১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটি ও ৫৩ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদের তালিকা পেশ করে। আমীরে হেফাজত আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ৫৩ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ এবং ২১১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির উভয় তালিকাকে অনুমোদন করেন।’

মামুনুল হকের কমিটিতে পদ না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কেফায়াতুল্লাহ বলেন, ‘তিনি এখনও কারামুক্ত নন। কারামুক্ত হলে যথাযথ পদায়ন করা হবে।’ ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ঘোষিত নারী নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রধান শাহ আহমদ শফীকে প্রধান করে করা হয় ‘অরাজনৈতিক সংগঠন’ হেফাজতে ইসলাম। কিন্তু এর নেতাদের প্রায় সবাই ছিলেন ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন দলের নেতা।

হেফাজতের সদ্য ঘোষিত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মীর ইদরিস বলেন, ‘সবাইকে রাখা হয়েছে। যারা কারা অভ্যন্তরে আছেন তারাও হেফাজতে ইসলামের সদস্য। তাদের শুধু এখন কমিটিতে পদ দেয়া হয়নি। আর কিছু নয়।’ ঘোষিত কমিটিতে হেফাজতের প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে চান্দগাঁও এলাকার জামিয়া দারুল মাআরিফ মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা সুলতান যওক নদভীকে। আমীর পদে যথারীতি আছেন শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। দুই সিনিয়র নায়েবে আমীর হলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি খলিল আহমদ কাসেমী এবং ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের জামিয়া নুরিয়া আশরাফাবাদ মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী। নতুন কমিটির নায়েবে আমীর করা হয়েছে ৪৫ জনকে। এদের একজন প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর বড় ছেলে ইউসুফ মাদানী। তবে তার আরেক ছেলে আনাস মাদানী স্থান পাননি এই কমিটিতে। মহাসচিব পদে আছেন সাজিদুর রহমান। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে আছেন জুনায়েদ আল হাবীব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিদায়ী প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে ফুটে উঠেছে বিচার বিভাগের অবস্থা : খসরু
পরবর্তী নিবন্ধসরকার ড. ইউনূসকে হয়রানি করছে না : পররাষ্ট্রমন্ত্রী