বঙ্গোপসাগরের সোনাদিয়া এলাকায় গত সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুইটি ফিশিং বোটে হানা দিয়েছে সশস্ত্র জলদস্যুরা। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ৩ জেলেসহ ১১জন জেলে গতকাল বুধবার আনোয়ারার গহিরা উপকূলে ফিরে এসেছেন। তবে জলদস্যুরা আরো ১১ জেলেকে জিম্মি করে একজনকে ফিরিয়ে দিতে মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে জানিয়েছেন আনোয়ারার পূর্ব গহিরার বাসিন্দা ডাকাত কবলিত একটি বোটের মালিক জাহাঙ্গীর আলম।
কোস্টগার্ড গহিরা সাঙ্গু স্টেশন কমান্ডার আরশাদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া জেলেদের উদ্ধারে অভিযানে নেমেছে কোস্টগার্ড।
ফেরত আসা জেলেরা জানান, বঙ্গোপসাগরের সোনাদিয়া এলাকায় মাছ ধরার সময় গত সোমবার রাতে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার নুরুন্ননবীর মালিকানাধীন বোটে জলদস্যুরা হামলা করে বোটের মালামালসহ ১৭ জেলেকে জিম্মি করে। জলদস্যুদের হামলায় তারা আহত হন।
এ ঘটনার একদিন পর জলদস্যুরা গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আনোয়ারা উপজেলার পূর্ব গহিরার জাহাঙ্গীর আলমের বোটেও হামলা চালায়। তারা মালামাল লুট করতে গেলে জেলেরা বাধা দিলে ৩ জেলে গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় জাহাঙ্গীরের বোটে থাকা ৫ জেলের মধ্যে বোটের মাঝিকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়ার সময় ভোলার নুরুন্ননবীর মালিকানাধীন বোটে জিম্মি হওয়া ৭ জেলে লাফ দিয়ে জাহাঙ্গীরের বোটে চলে আসেন। এর পর ১১ জন জেলে ডাকাতের জিম্মিদশা থেকে গতকাল বুধবার সকালে আনোয়ারার গহিরা উপকূলে ফিরে আসতে সক্ষম হন।
ফিরে আসা জেলেরা হলেন, ভোলার চরফ্যাশন বাসিন্দা মহিউদ্দিন (৭০), মো.কালু (২৪), মনির হোসেন (৪০), তরিকুল ইসলাম (৬৪) জয়নাল আবেদীন (৬০), মিলন (৪০), মো. ফরিদ (৩৫),পূর্ব গহিরার আইয়ুব আলী (৩০), নেজাম উদ্দিন (৩০), শওকত (৩২), মো. পারভেজ (২২)। এদের মধ্যে ফরিদ, মহিউদ্দিন ও কালু গুলিবিদ্ধ হন। বাকিদের মারধর করে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গুলিবিদ্ধ ফরিদ জানান, জলদস্যুরা তাদের বোটে হামলা চালিয়ে ১৭ জন মাঝিমাল্লাকে জিম্মি করেছে। পরবর্তীতে তারা ৭ জন আনোয়ারার জাহাঙ্গীর
আলমের মালিকানাধীন বোটে করে পালিয়ে আসেন।
ডাকাতির শিকার হাফেজ মৌ. মনির উদ্দীন নামের বোটের মালিক আনোয়ারার পূর্ব গহিরার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম জানান, ৮ দিন আগে ৫ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে আমার মালিকানাধীন হাফেজ মৌ. মনির আহমদ বোটটি বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জলদস্যুরা আমার বোটে হামলা চালিয়ে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে। এ সময় বোটের মাঝি জামালকে জলদস্যুরা জিম্মি
করে নিয়ে যায়। অপহৃত জামাল মাঝিকে ফিরে পেতে জলদস্যুরা ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিলে ফেরত দেবে বলে জলদস্যুরা জানিয়েছে।
এ বিষয়ে সাঙ্গু কোস্টগার্ড পূর্বজোনের কমান্ডার আরশাদুল ইসলাম বলেন, আমরা স্থানীয়ভাবে জানতে পেরেছি বঙ্গোপসাগরে ২টি ফিশিং বোট জলদস্যুদের কবলে পড়েছে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার সকালে ১১ জেলে পূর্বগহিরার ফকিরহাট এলাকায় ফিরে এসেছে। জিম্মিদের উদ্ধার করতে কোস্টগার্ড অভিযান পরিচালনা করছে।