সড়ক নির্মাণের চার দশকেও প্রশস্ত হয়নি রাঙামাটি–খাগড়াছড়ি মহাসড়ক। মাত্র ১২ ফুট প্রশস্ত মহাসড়কে চলছে পর্যটন নির্ভর দুই জেলার যোগাযোগ। মাত্র ১২ ফুট সরু সড়কে চলছে ভারী যানবাহনও। অপ্রশস্ত সড়ক এবং অতি বাঁকের কারণে প্রায় সময়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ অবস্থায় দ্রুত সড়ক প্রশস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক কমানোর দাবি জানিয়েছেন যাত্রী ও চালকেরা।
জানা যায়, ১ হাজার ৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ কাজ করার জন্য ২০১৯ সালে প্রকল্প তৈরি করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ ৬ বছরেও প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি। খাগড়াছড়ি–রাঙামাটি সড়কের নিয়মিত চলাচলকারী স্থানীয় বাসিন্দা জহুরুল আলম বলেন, রাঙামাটি সড়কটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ সড়কটি সরু ও বাঁকসম্পন্ন। ফলে যানবাহন চলাচল খু্ব ঝুঁকিপূর্ণ। বাস চালক মো. জাফর আলম বলেন, মাত্র ১২ ফুটের রাস্তায় গাড়ি চালানো কঠিন। বিপরীত দিক থেকে একটা গাড়ি আসলে সড়কে আর জায়গা থাকে না। রাস্তার বাইরে গিয়ে অন্য যানবাহনকে সাইড দিতে হয়। অনেক সময় গাড়ি উল্টে যায়।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মো. সাদমান, শাহরিয়ার সমুন ও রিফাত হাসান বলেন, আমরা রাঙামাটি থেকে খাগড়াছড়ি যাচ্ছিলাম। এতো সরু সড়ক! পার্বত্য দুই জেলার মধ্যে যোগাযোগ এতো সরু সড়ক এটা অবিশ্বাস্য। ৬২ কিলোমিটার সড়কে চলাচল প্রচুর বাঁক। এ কারণে বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনার শঙ্কাও রয়েছে। সড়কটি দ্রুত প্রশস্ত করা উচিত।
খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. রোকন উদ্দিন বলেন, মাত্র ১২ ফুট প্রশস্ত সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল প্রায় অসম্ভব। আমাদের বড় বাসগুলো এখানে চলাচল অনুপযোগী। সড়কটি বড় করলে আমাদের যান চলাচল সুবিধা হবে। প্রশস্তকরণ এখন সময়ের দাবি। এখানে সামনের দিনগুলোতে পর্যটকদের চাপ আরো বাড়বে। সড়কটি সমপ্রসারিত হলে পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়রাদের চলাচলে সুবিধা হবে। নিয়ম অনুযায়ী আঞ্চলিক মহাসড়কগুলোর ২৪ ফুট প্রস্থ থাকার কথা। কিস্তু রাঙামাটি–খাগড়াছড়ি ৬১ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রস্থ মাত্র ১২ ফুট।
রাঙামাটি সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাঙামাটি–খাগড়াছড়ি সড়কটি চেঙ্গী ভ্যালি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৯৮৬ সালে নির্মিত হয় যার, প্রস্থ ১২ ফুট। ইতিমধ্যে সড়কের ডিজাইন পিরিয়ড শেষ হয়েছে, তাই সড়কটি ভারী যান চলাচলের জন্য উপযোগী নয়।
রাঙামাটি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, আঞ্চলিক মহাসড়কটি প্রশস্তকরণ ও বাঁক সরলীকরণের জন্য প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্পটি অনুমোদন হলে তা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি বা একনেকে যাবে। প্রকল্প পাশ হলে পরবর্তীতে দরপত্র আহ্বান করা হবে।












