সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটের কাছে স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ তিন শিশুর সন্ধান দুই দিনেও মেলেনি। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসা আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে গতকাল সকালে নৌবাহিনীর জাহাজ গুপ্তছড়া ঘাটে এসে উদ্ধার কাজে অংশগ্রহণ করে। এ সময় নৌবাহিনীর একটি ডুবুরি দলকে খোঁজাখুজি করতে দেখা যায়।
সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসার নেতৃত্বে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের টিম উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে গতকাল রাত দশটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিখোঁজ ৩ জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এদিকে সকাল থেকে নিখোঁজ সৈকতের পিতা সমীর কোস্টগার্ডের সাথে নিজের সন্তানকে খুঁজতে নেমে পড়েন গুপ্তছড়া ঘাটে। দুর্ঘটনা কবলিত স্পিডবোটে ছিলেন তিনিও। দুর্ঘটনার পর অন্য যাত্রীদের উদ্ধার করে কূলে পৌঁছে দিলেও নিজের ছেলেকে খুঁজে পাননি তিনি।
গতকাল সকালে নিখোঁজ সৈকতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার মা অনবরত কান্না করছেন। তিনি বলেন, ‘পারলে আমার ছেলেকে এনে দিন। আমি এখন কী নিয়ে বাঁচবো।’ অন্যদিকে সকাল ১০টায় কান্না করতে করতে গুপ্তছড়া ঘাটে আসেন নিহত আনিকার মা। তিন কন্যাকে হারিয়ে পাগল প্রায় পান্না বেগম।
জানা যায়, নিখোঁজ জমজ বোন আলিভা ও আলিফার বাবা ওমান প্রবাসী আলাউদ্দিন সবেমাত্র ছুটি কাটিয়ে প্রবাসে পাড়ি জমান। যাওয়ার সময় পিতাকে বিদায় জানাতে তিন কন্যা সাগর পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রাম আসেন মা পান্না বেগমসহ। আলাউদ্দিন বিদেশ যেতে না যেতেই শুনতে পান তিন সন্তান হারানোর এ মর্মান্তিক সংবাদ।
নিহত আনিকার মামা পরিচয় দেয়া মাসুদ রানা আজাদীকে বলেন, আমরা কোনো ধরনের মামলা করবো না। প্রকৃতির উপরে তো কারও হাত নেই। যদি ঘাট ইজারাদার মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো সহযোগিতা করেন তাহলে সেটা হয়তো আমরা নিবো।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় গুপ্তছড়া ঘাটের অদূরে স্পিডবোটের ইঞ্জিনের সাথে জেলেদের জাল আটকে বোট উল্টে যায়। এ ঘটনায় আনিকা নামে এক শিশু নিহত ও তার ছোট যমজ দুই বোনসহ তিন শিশু নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় ডুবে যাওয়া স্পিডবোট উদ্ধার হলেও চালক রিফাত পলাতক রয়েছেন।