কক্সবাজারের চকরিয়ায় খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসে দলছুট একটি বুনো হাতি। হাতিটি ভোররাতে খাবারের সন্ধানে এলেও দিনের আলো ফোটার পর স্থানীয়দের নজরে পড়ে। এতে গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ও ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে দলছুট হাতিটিও দিশেহারা হয়ে এক ইউনিয়ন থেকে অন্য ইউনিয়নে ছুটতে থাকে। এ সময় হাতির আক্রমণে দুই শিশুসহ পাঁচজন আহত হয়। তাদের একজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে বনবিভাগ, সাফারি পার্ক কর্মকর্তারা হাতির মাহুত, এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি) ও পুলিশ সদস্যদের নিয়ে হাতিটিকে তার আবাসস্থলে ফেরানোর চেষ্টা করলেও উৎসুক মানুষ হাতিটির পিছু নেয়ায় সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত বিএমচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পুচ্ছলিয়া পাড়ার লোকালয়ের মাঝে ধ্বংসপ্রায় বনের ঝোঁপ-জঙ্গলে অবস্থান করছিল। এই অবস্থায় হাতিটিকে নিয়ে উদ্বেগ-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মাঝে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার পর হাতিটিকে মাতামুহুরী নদী পার করিয়ে চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের পহরচাঁদা বনাঞ্চলে ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হয় সংশ্লিষ্টরা। হাতির আক্রমণে আহত হয় তিন শিশু ও দুই বৃদ্ধা। তারা হলেন চিরিঙ্গা ইউনিয়নের বুড়িপুকুর গ্রামের আবদুল মান্নানের তিনবছরের শিশুকন্যা উম্মে সালমা, সাহারবিল ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের হেলাল উদ্দিনের পুত্র মোহাম্মদ হোসাইন (৩) ও মোহাম্মদ সেলিমের কন্যা মহিমা বেগম (৭), পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের কাছিম আলী সিকদার পাড়ার মনজুরুল আলমের স্ত্রী মর্তুজা বেগম (৬০) ও একই ইউনিয়নের চরপাড়ার আহমদ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা বেগম (৬৫)।
এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের সহকারী তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, বুনো হাতিটি খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে এসে দলছুট হয়। তারা হাতিটিকে নির্দিষ্ট আবাসে ফেরাতে সকালে ইআরটি সদস্যদের নিয়ে অকুস্থলে যান। সবার সহযোগিতায় ও সারাদিনের চেষ্টায় হাতিটিকে সন্ধ্যার আগেই মাতামুহুরী নদী পার করিয়ে চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য বরইতলীর পহরচাঁদা বনাঞ্চলের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
চকরিয়া থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, লোকালয়ে আসা হাতিকে আবাসে ফেরাতে বনবিভাগ ও সাফারি পার্ক কর্মকর্তাদের সাথে পুলিশ সদস্যরাও নিয়োজিত ছিল। হাতির আক্রমণে আহত এক নারীর স্বজন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বাকিদের ব্যাপারে তথ্য নেই।