পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে থানা কক্ষের ভেতর এক সাংবাদিককে আটকে রেখে মারধর ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। মারধরের শিকার জোবায়েদ ইবনে শাহাদাত যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার। গতকাল রোববার দুপুরে খুলশী থানা কক্ষের ভেতর সিএমপি উত্তর বিভাগের উপকমিশনার আমিরুল ইসলাম তাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ করেন জোবায়েদ।
এদিকে জোবায়েদকে মারধরের খবর পেয়ে চট্টগ্রামে কর্মরত সাংবাদিকরা খুলশী থানার সামনে অবস্থান নিয়ে সাংবাদিককে হেনস্তা ও নির্যাতনের প্রতিবাদ জানান। তারা অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। প্রতিবাদ জানিয়েছে সিইউজে ও টিভি সাংবাদিক নেটওয়ার্ক।
এ বিষয়ে সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ সাংবাদিকদের বলেন, এক হাতে তালি বাজে না। আমরা আগে দেখি কী হয়েছে। এডিশনাল কমিশনার ওখানে গিয়েছেন। আশা করব ফেয়ারলি, নিউট্রালি একটি প্রিমিলারি ইনকোয়ারি করবে।
সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের বলেন, যে ঘটনাই ঘটুক না কেন, যেভাবেই ঘটুক না কেন, আমরা কমিশনার স্যারের নির্দেশে সুষ্ঠু তদন্ত করব। যে দোষী হোক তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করব। আমরা প্রাথমিক তদন্ত করে কমিশনার স্যার, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেব। সিদ্ধান্ত স্যাররা নেবেন।
সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখন তদন্ত করব, তখন এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত বা উপস্থিত ছিল এবং সিসি ক্যামেরায় বা অন্য কোনো মাধ্যমে তথ্য আসে সেটাও নেব। তিনি বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে সেটা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত। এটার প্রতিকার কীভাবে করা যায়, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেটার ব্যবস্থা নেব আমরা।
তদন্ত স্বচ্ছ রাখার জন্য কী ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে চাইলে বলেন, আপনাদের প্রতিনিধি আমাদের সাথে ইনক্লুড করব।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জোবায়েদ ইবনে শাহাদাত জানান, শনিবার জিইসি কনভেনশনে নিউজ কাভারেজে গিয়ে মানিব্যাগ হারিয়ে যায়। তাতে তার অফিসিয়াল কার্ডও ছিল। তাই আজ খুলশী থানায় হারানো জিডি করতে আসি। সেখানে গতকাল গ্রেপ্তার হওয়া ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে কথা বলছিলাম। এ সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডিসি আমিরুল ইসলাম খারাপ আচরণ শুরু করেন।
জোবায়েদ বলেন, ‘ব্যবহার খারাপ করছেন কেন? আপনি এভাবে কথা বলতে পারেন কিনা’ বললে ডিসি আমিরুল আমার ওপর চড়াও হন এবং আমাকে থানার ভেতরে নিয়ে যেতে পুলিশ সদস্যদের অর্ডার করেন। পরে আমাকে রুমে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক মারধর করেন। পরে আমি ডিসি আমিরুলের কাছে প্রশ্ন রাখি, আপনি আমাকে এভাবে মারতে পারেন কিনা? উত্তরে ডিসি আমিরুল বলেন, তুই ফ্যাসিস্ট, আমি তোকে মারিনি, শয়তানকে মেরেছি। বেশি কথা বললে একদম গায়েব করে ফেলব। ঘটনার সময় তার সঙ্গে থাকা ক্যামেরাপারসন আসাদুজ্জামান লিমনকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেন জোবায়েদ।