পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন নগর গড়তে নগরবাসীর সহযোগিতা চেয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, পরিচ্ছন্ন নগর করা শুধু সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীদের দায়িত্ব নয়, এক্ষেত্রে নাগরিকদেরও সচেতন ভূমিকা রাখতে হবে। এ সময় নাগরবাসীর উদ্দেশে মেয়র বলেন, যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা, প্লাস্টিক ও পলিথিন ফেলবেন না। এগুলোই জলাবদ্ধতার মূল কারণ। এই শহর আমার, আপনার সবার। শহর পরিষ্কার রাখতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। পরিচ্ছন্নতার কাজ দ্রুত করতে আরও ডাস্টবিন, ট্রাক ও আধুনিক মেশিনারিজ যুক্ত করা হবে। চট্টগ্রামকে ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি সিটি হিসেবে গড়ে তোলাই আমার প্রধান লক্ষ্য। গতকাল বুধবার দুপুরে নগরের বাকলিয়া এলাকায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নগরের পূর্ব ও পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডে চাল ও স্মার্ট কার্ড বিতরণ এবং বিএনপির সদস্য ফরম পূরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মেয়র। তিনি পশ্চিম বাকলিয়া বড়মিয়া মসজিদ এলাকা, পূর্ব বাকলিয়া আবদুল লতিফ হাট এলাকা ও বজ্রঘোনা সোনা মিয়া সওদাগরের বাড়ির মাঠে ৮০০ পরিবারের মাঝে চাউল বিতরণ করেন। এর আগে তিনি সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক বরাদ্দকৃত পূর্ব বাকলিয়া সৈয়দ আব্দুল আজিজ শাহ্ পাড়া হাজী হামিদুল্লাহ জামে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থান সংস্কারের ২য় পর্যায়ের কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ডা. শাহাদাত বলেন, দায়িত্ব নেয়ার সাত আট মাসের মধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫০ শতাংশ কাজ আল্লাহর রহমতে শেষ করেছি, বাকি কাজও দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। চকবাজার এলাকায় ফুটপাত দখলমুক্ত করা হয়েছে, কাউকে উচ্ছেদ না করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শহরের রাস্তার উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে, বর্ষায় ভেঙে যাওয়া সড়কগুলোর কাজ চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, আগ্রাবাদ একটি আন্তর্জাতিক মানের বাণিজ্যিক এলাকা। প্রতিদিন এখানে দেশি বিদেশি ব্যবসায়ী ও পর্যটক যাতায়াত করেন। সেখানে অফিস সময়ে রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে হকার বসে। এতে যানজট ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ে। তাই আমি ওখানে হকারদের সময় নির্ধারণ করে দিয়েছি। সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অস্থায়ী ভ্যানগাড়ি ও ছাতা ব্যবহার করে হকাররা দোকান বসাতে পারবেন। তবে দিনের বেলা ব্যবসার নামে কোনোভাবেই রাস্তা দখল করা যাবে না। এছাড়া যেসব হকার ব্যবসা করবেন তাদের ব্যবসা ভ্রাম্যমাণ হতে হবে। কিন্তু স্থায়ীভাবে নালা, সড়ক, ফুটপাত দখল করে হকার ব্যবসার নামে দখলদারি চলবে না।
ডা. শাহাদাত বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র মেরামতে যে ৩১ দফা দিয়েছে, সেগুলোই আসল সংস্কার। যে কোনো সংস্কার রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা। সংস্কার একটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার। জাতীয় সংসদে ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে সংস্কার তথা আইন প্রণয়ন হয়। বিএনপি বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলেই রাষ্ট্র মেরামতের কর্মসূচি দিয়েছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বিএনপিই দেশের সংস্কার করবে।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সবসময় মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলেছেন। গত ১৬ বছরে একমাত্র নেত্রী যাকে জোরপূর্বক জেলে প্রেরণ করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি দুর্নীতিমুক্ত, সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।
মেয়র বলেন, অতীতের আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা নির্যাতন নিষ্পেষণ সহ্য করেও দল ও এলাকার মানুষের পাশে থেকেছেন। বিশেষ করে বিএড কলেজ এলাকায় নেতাকর্মীদের অবদান কখনো ভোলা যাবে না। আমি আজকে মেয়র হয়েছি শুধুমাত্র মহান আল্লাহর রহমতে এবং আপনাদের ত্যাগ তিতিক্ষার কারণে। আন্দোলন সংগ্রামের সময় যেসব নেতাকর্মী ভূমিকা রেখেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মেয়র বলেন, আমার দরজা সবসময় আপনাদের জন্য খোলা থাকবে। আমি মেয়র থাকি বা না থাকি, আপনাদের অভিভাবক হিসেবেই পাশে থাকবো।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, সাবেক গণশিক্ষা সম্পাদক ইব্রাহিম বাচ্চু, আমিন মাহমুদ, সাবেক কাউন্সিলর মো. তৈয়ব, মো. শাহজাহান, ইসমাইল বাবুল, আবদুল্লাহ আল ছগির, হাজী মো. মহিউদ্দিন, আলী আজগর, মো. আলমগীর, সাইফুল ইসলাম নিরব, হাজী মো. ইউছুপ, ফোরকান হোসেন চৌধুরী, হাজী মো. মুছা, স এম পারভেজ, খোরশেদ আলম, জাফর ইকবাল, মো. ইখতিয়ার, আবদুল আজিজ, মো. জসিম উদ্দিন, ওমর ফারুক, ছানাউল্লাহ, আবদুল কাদের, রাসেল শিকদার, উসমান গনি, ছাত্রদল নেতা সালাউদ্দীন কাদের আসাদ ও গাজী শওকত।