দাম বাড়ার তালিকায় এবার ডাল

সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা পর্যন্ত

জাহেদুল কবির | সোমবার , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ

ভোগ্যপণ্যের বাজারে ঊর্ধ্বমুখীর তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ডাল। খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীল ছিল ডালের দাম। তবে সমপ্রতি বাজারে সরবরাহ সংকটের অজুহাতে সব ধরনের ডালের দাম কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে ভোক্তারা বলছেন, বাজারে ডালের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ডালের দাম বৃদ্ধি করছেন।

গতকাল খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা মসুর ডালের দাম কেজিতে ৮ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়। এছাড়া চিকন মসুরের ডালের দাম ১০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকায়। খেসারি কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায় এবং মটর ডাল কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের ডাল আমদানিকারকরা বলেন, আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি ডাল শস্য আমদানি হয় অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা থেকে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে ডালের বুকিং দর বেড়ে গেছে। এছাড়া ডলার সংকটের কারণে অনেক ডাল ব্যবসায়ী এলসি (ঋণপত্র) খুলতে পারেননি। ফলে আমদানি কম হওয়ায় বাজারে ডালের ঘাটতি রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজার হিসেবে এখনো ডালের বাজার সহনশীল রয়েছে।

ডালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, আমদানি কম হওয়ায় বাজারে ডালের ঘাটতি রয়েছে। পরিবহন ভাড়া দ্বিগুণ হয়েছে। চাহিদা বাড়লে দাম বাড়ে, এটিই বাজারের ধর্ম। এখানে কৃত্রিম সংকট তৈরির কিছু নেই। যখন পণ্য বেশি আসে, তখন ব্যবসায়ীরা কার আগে কে পণ্য বিক্রি করবেন, সেই প্রতিযোগিতায় নেমে যান। কারণ ভোগ্যপণ্যের বাজার কখনো স্থিতিশীল থাকে না। সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণেও ব্যবসায়ীদের আমদানিতে অতিরিক্ত অর্থ গুণতে হচ্ছে।

দেখা যায়, এলসি হয়েছে এক দরে, কিন্তু পণ্য খালাস পর্যায়ে যখন কোনো কারণে ডলারের দাম বেড়ে যায়, ব্যবসায়ীদের তখন বাড়তি ডলারের মূল্য পরিশোধ করে পণ্য খালাস করতে হয়। আমদানি ব্যয় বাড়লে সেটি পাইকারি ও খুচরা উভয় বাজারে প্রভাব পড়বে।

এদিকে গতকাল কাজীর দেউড়ি বাজারের কয়েকটি মুদি দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোটা মসুর ডাল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি, এক সপ্তাহ আগে ছিল ১০০ টাকা। এছাড়া চিকন মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, এক সপ্তাহ আগেবিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা। খেসারি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায় এবং মটর ডাল কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, চাল, ডালসহ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তরা। বর্তমানে বাজারে এমন কোনো পণ্য নেই যে দাম বাড়েনি। একটার পর একটা দাম বেড়েই যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, ছয় মাস আগে কম দামে আমদানি করা পণ্যও বুকিং দর বাড়ার অজুহাত তুলে দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। যেভাবে পণ্যের দাম বাড়ছে, সেভাবে বাজার মনিটরিং হচ্ছে না। সেই সুযোগে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে মতো দাম বাড়াচ্ছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচসিকের সাবেক প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইফুদ্দিনের আত্মসমর্পণ
পরবর্তী নিবন্ধ৮ কোটি, এগিয়ে বেসরকারি চাকুরেরা