দশম দফায় দুই পর্যায়ে ভাসানচরের উদ্দেশ্য উখিয়ার ক্যাম্প ছেড়েছেন আরো ৪৮৩ পরিবারের ১২৮৮ জন রোহিঙ্গা। গতকাল রোববার দুপুরে ও সন্ধ্যায় উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠের অস্থায়ী ট্রানজিট পয়েন্ট থেকে এসব রোহিঙ্গারা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই এর তত্ত্বাবধানে রওয়ানা দেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কঙবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহা রেজুওয়ান হায়াত।
তিনি বলেন, ভাসানচরে উদ্দেশ্যে ৭১৮ সদস্যের রোহিঙ্গাদের একটি দল দুপুর দেড়টার দিকে উখিয়ার ট্রানজিট পয়েন্ট ছেড়ে যায়। একইদিন সন্ধ্যা পাঁচটার পরে আরো ৫৭০ জনের একটি দল ভাসানচরের উদ্দেশ্য উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ট্রানজিট পয়েন্ট ত্যাগ করে। মূলত তারা চট্টগ্রামে রাতে পৌঁছবেন। সেখান থেকে সোমবার (আজ) সকালে ভাসানচরের উদ্দেশ্য রওয়ানা দেয়ার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, শনিবার রাতে ও রোববার সকালে স্বেচ্ছায় ভাসানচর গমনোচ্ছুক রোহিঙ্গাদের উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠের ট্রানজিট পয়েন্টে নিয়ে আসা হয়। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ও সরকারের মধ্যে ভাসানচরে শরণার্থী ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) হওয়ার পর তৃতীয় বারের মতো সেখানে রোহিঙ্গাদের নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
রোহিঙ্গা নেতা সিরাজুল মোস্তফা, জাফর, জুহর আলম জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাম্পে সহিংস ঘটনায় সাধারণ রোহিঙ্গারা নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে। তারা সুযোগ পেলে মিয়ানমার ফিরতে ইচ্ছুক। কিন্তু সে ধরনের সুযোগ না থাকায় আতঙ্কিতরা ভাসানচরে স্থানান্তরিত হতে রাজি হচ্ছে, অথচ ইতিপূর্বে অনেক চেষ্টা করেও তাদের সেখানে যেতে রাজী করানো কঠিন ছিল।
গত ডিসেম্বরে সর্বশেষ ৯ম দফায় ২০ হাজারের ও বেশি রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া গত বছরের মে মাসে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করা ৩০৬ রোহিঙ্গাকে সমদ্র থেকে উদ্ধার করে সেখানে নিয়ে রাখা হয়। তবে ভাসানচর হতে কিছু রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে ক্যাম্পগুলোতে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারে সেনা অভিযান থেকে প্রাণে বাঁচতে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা উখিয়া-টেকনাফের ৩৪ টি আশ্রয় ক্যাম্পে বসবাস করছেন। শরণার্থীদের চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত ১ লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।