বাঁশখালীর প্রাণকেন্দ্র জলদী ইউনিয়নকে ২০০২ সালের ডিসেম্বরে পৌরসভায় উন্নীত করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৩ সালের ১৫ জানুয়ারি প্রথম পৌর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন বিএনপি নেতা কামরুল ইসলাম হোছাইনী। পরবর্তীতে ২০০৪ সালের ৫ মে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে প্রথম পৌর মেয়র নির্বাচিত হন কামরুল ইসলাম হোছাইনী। পরবর্তীতে ২০১১ সালের ১৮ জানুয়ারি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে পৌর মেয়র নির্বাচিত হন শেখ ফখরুদ্দিন চৌধুরী। এরপর ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন মুক্তিযোদ্ধা শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী। এ তিনবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিএনপির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল মেয়র পদটি। এবার তার ব্যতিক্রম হবে না। পৌরসভা বাস্তবায়ন হওয়ার দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও আশানুরুপ উন্নয়ন হয়নি বাঁশখালী পৌরসভার। সি থেকে এ গ্রেডে উন্নীত হওয়ার পর পৌর এলাকার জায়গা জমির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে আশাতীত। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আসন্ন পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য বিভিন্নজন নানাভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে বিএনপির পক্ষে সাবেক মেয়র কামরুল ইসলাম হোছাইনী সহ কয়েকজনের নাম শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হিসাবে তিনিই থাকবেন। তবে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, এরমধ্যে বর্তমান মেয়র মুক্তিযোদ্ধা শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী এগিয়ে রয়েছেন। এরপর রয়েছেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী নুর হোসেন, সাবেক পৌর মেয়র শেখ ফখরুদ্দিন চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শ্যামল কান্তি দাশ, আওয়ামী লীগ নেতা আকতার হোসেন, উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মনছুর আলী, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক অ্যাড. তোফাইল বিন হোছাইন, পৌর যুবলীগের আহবায়ক হামিদ উল্লাহ, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজতবা আলী চৌধুরী মিশু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদুল ইসলাম।
জামায়াতের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে রংগিয়াঘোনা ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জামায়াত নেতা মাওলানা মো. ইসমাঈলের নাম উঠে আসলেও বর্তমানে তারা অনেকটা নীরব।
বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে বাঁশখালী পৌরসভার শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বার বার একটি নাম উঠে আসে, তিনি হলেন সাবেক পৌর মেয়র কামরুল ইসলাম হোছাইনী। এছাড়া রয়েছেন পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি সরোয়ার আলম আস্করি, বিএনপি নেতা রাসেল ইকবাল মিয়া, দক্ষিন জেলা বিএনপির সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক অ্যাড. লায়ন নাছির উদ্দিন।
এদিকে পৌরসভার ছয়টি ওয়ার্ডে সংখ্যালঘু ভোটারের আধিক্য রয়েছে। যে কারণে এবার মনোনয়ন পেলে চমক দেখাতে পারেন আওয়ামী লীগ নেতা সম্পাদক শ্যামল কান্তি দাশ।
তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী যাকে চাইবেন তিনি পেতে পারেন মনোনয়ন ।
মেয়র মুক্তিযোদ্ধা শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী বলেন- আমি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে যতটুকু সম্ভব উন্নয়ন কাজ করেছি, এখনও চলমান রয়েছে । দল আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করব, নতুবা যাকে মনোনয়ন দেয় তার পক্ষে কাজ করব।
সাবেক মেয়র শেখ ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন- পৌর এলাকায় ন্যায়বিচার ও সুশাসন নিশ্চিত ও শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করব, দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়। তবে ২০১৫ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় তিনি রাজনীতিতে অনেকটা নিষ্ক্রিয় ছিলেন। বাঁশখালী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী নুর হোসেন ২০০৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের পক্ষে নির্বাচন করলেও পরের নির্বাচনগুলোতে দলীয় মনোনয়ন পাননি। পরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হলেও গত উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারেননি। এবার তিনি পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হতে তৎপর রয়েছেন। তার ছো্টভাই আওয়ামীলীগ নেতা আকতার হোসেনও নির্বাচনে প্রার্থী হতে তৎপর রয়েছেন। নতুনদের মধ্যে তৎপর রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা আবদুল লতিফের ছোটভাই যুবনেতা মনসুর আলী, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক অ্যাড. তোফাইল বিন হোছাইন, পৌর যুবলীগের আহবায়ক হামিদ উল্লাহ, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজতবা আলী চৌধুরী মিশু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদুল ইসলাম। তবে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও অনেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন এটা নিশ্চিত ।
সূত্র জানায়-বাঁশখালী পৌরসভার নির্বাচন ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে।