দলীয় প্রতীক না থাকায় আ. লীগে বাড়তে পারে প্রার্থীর সংখ্যা

উপজেলা নির্বাচন : চন্দনাইশ

মুহাম্মদ এরশাদ, চন্দনাইশ | বুধবার , ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৮:১২ পূর্বাহ্ণ

চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদের টানা তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. আবদুল জব্বার চৌধুরী সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় গত ২৮ নভেম্বর উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তাই এবার চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নতুন সমীকরণ। সংসদ নির্বাচনের পরপর উপজেলা নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করায় নেতাকর্মী ও ভোটারদের মধ্যেও উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

তবে বরাবরেরই মতো বিএনপি ও এলডিপি নির্বাচন বর্জনে রয়েছে। তাই তাদের প্রার্থী হিসেবে কারো নাম এই মুহূর্তে আলোচনায় নেই। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইচ্ছুক সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতোমধ্যে এলাকার ভোটারদের সাথে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন উপায়ে জানান দিচ্ছেন নিজের অবস্থান। পদত্যাগ করা মো. আবদুল জব্বার চৌধুরী উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে। এবার আওয়ামী লীগের ১০ জন, জাতীয় পার্টির ১ জনসহ ১১ জনের নাম শোনা যাচ্ছে। এদের মধ্যে রয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কাশেম, চন্দনাইশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক আবু আহমদ চৌধুরী জুনু, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক বরকল ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহিম চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ও জেলা পরিষদের সদস্য এড. কামেলা খানম রূপা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মীর মো. মহিউদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা লায়ন নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য মো. গিয়াস উদ্দীন সুজন, গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি শেখ টিপু চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ তৌহিদুল আলম এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সোনা মিয়া চৌধুরী।

এবার আওয়ামী লীগের ১০ জন নেতা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আগ্রহ প্রকাশ করলেও অধিকাংশ দলীয় সিন্ধান্ত মতে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে দল যাকে সমর্থন দেবে তার পক্ষে কাজ করার কথা বলছেন তারা। তবে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক না থাকায় দলীয় প্রার্থীর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, ছাত্র রাজনীতি থেকে এ পর্যন্ত দলের সাথে রয়েছি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দলীয় কার্যক্রম সক্রিয়ভাবে পরিচালনা করে আসছি। ফলে আগের চেয়ে বর্তমানে দলের সাংগঠনিক শক্তি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এবার উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সমর্থন পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আমার কোনো দুর্নাম নেই। সবসময় দলীয় নেতাকর্মী ও জনগণের পাশে ছিলাম। সদ্য সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনেও নৌকার পক্ষে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রেখেছি। এবার দলীয় প্রতীক না থাকলেও আশা করি দলের নেতাকর্মীরা আমার পক্ষে থেকে কাজ করবেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু আহমদ চৌধুরী জুনু বলেন, দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করছি। দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরাও আমার পাশে রয়েছেন। একসময় মাননীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী আমাকে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন। এখন সময় এসেছে উপজেলা নির্বাচন করার। আমি আশা করি দলের শীর্ষ থেকে তৃণমূল নেতৃবৃন্দ আমার পাশে থেকে জয়ের ব্যাপারে সহযোগিতা করে যাবেন।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মো. আবদুর রহিম চৌধুরী বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য মো. গিয়াস উদ্দীন সুজন বলেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে যেহেতু দলীয় প্রতীক থাকবে না সেহেতু উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে কোনো বাধা নেই। তাই আমি নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরবর্তীতে দলীয়ভাবে কোনো সিদ্ধান্ত এলে সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপআলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেব।

উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ তৌহিদুল আলম বলেন, মনোনয়ন চাইব, তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নয়। মাননীয় এমপিসহ দলীয় নেতাকর্মীরা যে সিদ্ধান্ত নেবেন সে মোতাবেক পদক্ষেপ নেয়া হবে।

চট্টগ্রাম১৪ আসনে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে আগামী ৫ বছর তার সহযোগী কে হবেন এ নিয়ে চন্দনাইশের রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। উল্লেখ্য ১৯৮৫ সালে প্রথম চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাচন হয়। এবার ষষ্ঠবারের মতো নির্বাচন হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকোরবানিগঞ্জে গৃহবধূকে খুনের মামলায় যুবকের মৃত্যুদণ্ড
পরবর্তী নিবন্ধইমরান খানের ১০ বছরের কারাদণ্ড