দরপত্র কিনেও জমা দেয়নি কোনো বিদেশি কোম্পানি

বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান পর্যালোচনায় পেট্রোবাংলার কমিটি, তৈরি করছে অ্যাকশন প্ল্যানও

হাসান আকবর | শনিবার , ১ মার্চ, ২০২৫ at ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গোপসাগরে তেলগ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশি কোম্পানির অনাগ্রহ দেখা গেছে। ২০২৪ সালের ১০ মার্চ পেট্রোবাংলা বঙ্গোপসাগরের ২৪টি ব্লকে তেলগ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে। তবে ৯ ডিসেম্বর শেষ সময় পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক কোম্পানি দরপত্র জমা দেয়নি। যদিও সাতটি বিদেশি কোম্পানি দরপত্র কিনেছিল, শেষ পর্যন্ত তারা প্রস্তাব জমা দিতে আগ্রহ দেখায়নি। পেট্রোবাংলা বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি নতুন করে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের ব্যাপারে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করছে বলেও সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।

পেট্রোবাংলার দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগরের গভীর এবং অগভীর অংশ মোট ২৬টি ব্লকে বিভক্ত করে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের পরিকল্পনা করা হয়। এর মধ্যে ৪ ও ৯ নম্বর ব্লকে কাজ করছে ভারতীয় কোম্পানি অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস কর্পোরেশন লিমিটেড (ওএনজিসি)। বাকি ২৪টি ব্লকের তেল গ্যাস অনুসন্ধানে ছয় মাস সময় দিয়ে গত ১০ মার্চ দরপত্র আহ্বান করে বিগত সরকার। কিন্তু শুরু থেকে এই দরপত্রে তেমন সাড়া পরিলক্ষিত হয়নি। ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তিন মাস বাড়িয়ে ৯ ডিসেম্বর শেষ সময় নির্ধারণ করে। এর মধ্যে ৭টি প্রতিষ্ঠান টেন্ডার ডকুমেন্টস ক্রয় করে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে তারা কোনো দরপত্র দাখিল করেনি। অপরদিকে বঙ্গোপসাগরের অগভীর অংশে এসএস৪ ও এসএস৯ ব্লকে তেলগ্যাস অনুসন্ধান পরিচালনাকারী ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি ওএনজিসি তেমন কোনো সফলতা পায়নি। এতে করে কোম্পানিটি তাদের মেয়াদ আরো দুই বছর বাড়ানোর জন্য আবেদন করে। পেট্রোবাংলা ওই আবেদনটি বিবেচনার জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

দুটি ব্লকে অনুসন্ধান চললেও বাকি ২৪টি ব্লকে অনুসন্ধান চালানোর ব্যাপারে সরকার আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে উল্লেখ করে পেট্রোবাংলার একজন কর্মকর্তা জানান, আসলে দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাসহ পারিপার্শ্বিক কারণে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো টেন্ডার কিনেও দাখিল করেনি। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো অনুসন্ধানে আগ্রহী হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের তেলগ্যাস অনুসন্ধানে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো আগ্রহ দেখিয়ে আসছিল।

সূত্র বলেছে, আন্তর্জাতিক আদালতে ২০১২ সালে মিয়ানমার ও ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্র সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির পর সর্বমোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি সমুদ্র অঞ্চলের ওপর বাংলাদেশের মালিকানা নিরঙ্কুশ হয়। কিন্তু বিস্তৃত অঞ্চলের মালিকানা নিশ্চিত হলেও তেল গ্যাস অনুসন্ধানে কার্যত তেমন কাজ হয়নি। এখন নতুন করে উদ্যোগ নিয়ে সাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে গতি আনা না গেলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের গ্যাস সেক্টর বড় সংকটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্বাচিত সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয় : তারেক রহমান
পরবর্তী নিবন্ধইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করেন