‘মুজিববর্ষের আহ্বান, দক্ষ হয়ে বিদেশ যান’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে গত ১৮ ডিসেম্বর শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে যথাযথ মর্যাদায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালিত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ১৫ জন বাংলাদেশী ইপিএস কর্মীকে এবং সর্বোচ্চ সংখ্যক বাংলাদেশী ইপিএস কর্মী নিয়োগের জন্য ১১ জন কোরীয় নিয়োগকর্তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
করোনা সংক্রমণের উর্ধগতির কারণে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
একই কর্মস্হলে দীর্ঘ ৭-৯ বছরের উপরে অবস্থানকারী হিসেবে মো. মিজানুর রহমান, মো. রাশেদুর রহমান, মো. রাকিবুল হাসানকে এবং কোরিয়ান ইমিগ্রেশন এন্ড ইন্টিগ্রেশন (কেআইআইপি) কোর্স সম্পন্নকারী ও ভাষা দক্ষ হিসেবে মো. রাকিবুল হাসান, মো. শাহাদাত হোসেন, মো. ইয়াছিন শেখ, মনির হোসাইন ও এস এম বেলাল বিন করিমকে সম্মাননা ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
এছাড়াও বৈধভাবে রেমিটেন্স প্রেরণকারী হিসেবে মো. আখতারুজ্জামান, ফজলুর রহমান মাসুম, দুলাস মিয়া, ওমর আল ফারুক ও মো. মনিরকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
কোরীয় সরকার কর্তৃক পুরস্কারপ্রাপ্ত ফেরদৌস নওশাদ, মো. আজমীর, মো. মনির হোসাইনকে ও কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ততার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কোরিয়াতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য কাজী শাহ আলম, আজমীর হোসাইনকে সম্মাননা ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
কোরীয় নিয়োগকর্তা হিসেবে মি. জো হিও, মি. সেং রিউলি, মি. চই জংউন, মি. গো হিমি, মি. জো সাং হান, মি. জি হূন, মি. কিম সাং চেশি, মি. জিউ ওয়ে বিক, মি. কিম সে, মি. ইউমিজি, মি. কিম জাংকে সম্মাননা ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারীর কারণে দূতাবাস কর্তৃক ডাকযোগে সম্মাননা ও ক্রেস্ট প্রেরণ করা হয়।
স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে পুরস্কারপ্রাপ্ত আজমীর হোসাইন বলেন, “দীর্ঘ ৯০০ ঘণ্টার বেশি অনেক পরিশ্রম করে স্বেচ্ছাশ্রম দেওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার তথা দূতাবাস কর্তৃক পুরস্কার পেয়ে আমি অত্যধিক আনন্দিত এবং দূতাবাসের প্রতি কৃতজ্ঞ।”
পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ সমূহ পাঠের পর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী এবং জাতিসংঘের মহাসচিবের প্রেরিত বাণী সমূহ পাঠ করা হয় অনুষ্ঠানে।
অতঃপর সম্মাননাপ্রাপ্ত ইপিএস কর্মী ও নিয়োগকর্তাদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও তাদের কর্মকাণ্ডের ওপর একটি বিশদ আলোচনা করেন প্রথম সচিব(শ্রম)মকিমা বেগম।
পরে রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদানের কথা গুরুত্বের সাথে তুলে ধরে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন।
ইপিএস কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, “মহামারীর এই সংকটজনক পরিস্থিতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বোয়েসেল এবং দূতাবাসের তৎপরতার কারণে বাংলাদেশে ছুটিতে ও রিলিজে অবস্থানরত ৫৬৬ জন ইপিএস কর্মীকে ইতিমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। যেসব কর্মীদের রিলিজের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল দূতাবাসের হস্তক্ষেপের কারণে তাদের অনেকেরই রিলিজের মেয়াদ সংক্রান্ত জটিলতার অবসান ঘটানো সম্ভব হয়েছে এবং পুনরায় তারা নতুন কর্মস্হলে যোগ দিতে সক্ষম হয়েছেন। এছাড়াও ভিসা নিষেধাজ্ঞা শিথিলসহ রোস্টারভুক্ত, কমিটেড ও রেগুলার ইপিএস কর্মীদের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার প্রবেশ দ্বার উন্মুক্ত করার লক্ষ্যে দূতাবাস অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।” প্রবাসীদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য দূরশিক্ষণের পাশাপাশি ঢাকা চেম্বার অভ কমার্সের সাথে যৌথ উদ্যোগে খুব শীঘ্রই অনলাইন উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ কোর্স শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
এরপর বাংলাদেশী মোটিফের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করে আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।