দক্ষিণপন্থিও না, উত্তরপন্থিও না, বিএনপি মধ্যপন্থি

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সালাহউদ্দিন

| শুক্রবার , ৮ আগস্ট, ২০২৫ at ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি মধ্যপন্থি মতাদর্শে বিশ্বাস করে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। গতকাল বৃহস্পতিবার গুলশানের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। সেখানে ইসলামপন্থি বিভিন্ন দলের সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা দক্ষিণপন্থাও না, উত্তরপন্থাও না, আমরা বাংলাদেশের পন্থা, আমরা মধ্যপন্থিতে বিশ্বাস করি। সেজন্য বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক শক্তি ও জনগণের প্রতিনিধিত্বকে নিয়ে যারা রাজনীতি করে, তাদের সঙ্গে কথা বলছি। এই দেশের রাজনীতিতে একটা সৌহার্দপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই, যেন মতাদর্শের পার্থক্য থাকলেও সব দল জাতীয় স্বার্থে এক জায়গায় বসতে পারি। এ লক্ষ্যে আমরা সব পন্থার সঙ্গে আলোচনা করতে চাই। খবর বিডিনিউজের।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, এখন ইসলামপন্থি দল হিসেবে আপনারা যাদেরকে অভিহিত করছেন, হ্যাঁ, তারা তো বাংলাদেশের রাজনীতির একটা অংশের প্রতিনিধিত্ব করে। আরও বেশি করে বলব যে, দেশের জনগণের ৯০ শতাংশের বেশি ইসলাম ধর্মাবলম্বী। তাদের প্রতি এসব মানুষের রাজনৈতিক সমর্থন না থাকলেও মানসিক একটা সমর্থন আছে। তিনি বলেন, এদেশে আমরা যেমন বলি, কোরআনসুন্নাহর বিরুদ্ধে কোনো আইন প্রণয়ন করা যাবে না, শরীয়াহবিরোধী কোনো আইন প্রণয়ন করা যাবে। এসব বক্তব্য তারাও (ইসলামী দলগুলো) দেয়, আমরাও দেই। তবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অনেক সময় জাতীয় সংসদে আলাপআলোচনার মধ্য দিয়ে অনেক বিষয়ে একটা সমঝোতার পথ ধরে আলোচনা করতে হয়। সব মতাদর্শের মানুষের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে যদি ঐক্যবদ্ধভাবে আইন প্রণয়ন করা যায়, তাহলে সে আইন বাস্তবায়ন করা যায়। কিন্তু বিশাল জনগোষ্ঠীর মতামতের বাইরে যদি কোনো আইন প্রণয়ন করা হয়, সেই আইনটা কিন্তু বাস্তবায়ন করা যায় না, বা বাস্তবায়ন করাটা কঠিন।

আগামী সংসদ নির্বাচন জনগণ এবং সেনাবাহিনীই সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে, বর্তমানে পুলিশের যে কাঠামো সেই কাঠামো অনুসারে আমাদেরকে ওভারনাইট পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ এ মুহূর্তে নাই। কিন্তু তাদেরকে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে একটা জায়গায় রাখতে হবে। তার সঙ্গে থাকবে অন্যান্য বাহিনীবিজিবি, আনসারসহ যাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে সেনাবাহিনী। তারা খুব সম্ভবত এক লাখ সদস্য নিয়োজিত করার জন্য একটা পরিকল্পনা করছে সরকারের অনুমতি নিয়ে। সালাহউদ্দিন বলেন, এবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা আমি মনে করি, জনগণই এবার সবচেয়ে স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে চায়, এটা তাদের প্রত্যাশা। সুতরাং যখন জনগণের প্রত্যাশা এরকম হবে যে, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু, সুন্দর, একটা নির্বাচন অনুষ্ঠান করা, উৎসবের মতো করে ভোট দেওয়া, সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকাটা গৌণ হবে। এখানে প্রার্থীর মানসিকতা ও ভোটারদের মানসিকতাই মূখ্য হবে। আমরা আশা করি, সামনের দিনে জনগণ এ ইতিহাসটা সৃষ্টি করবে।

নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, ইসি সংস্কারের মধ্যে কী কী জিনিস বাস্তবায়ন হয়েছে সেটা একটু বলতে চাই। নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছিল ঐক্যবদ্ধভাবে; সবার মতামতের ভিত্তিতে সেটা হয়েছে। তবে নির্বাচন সংক্রান্ত যে দুইএকটা সংস্কারের ক্ষেত্রে আমরা ঐকমত্য হয়েছি সেটা পরবর্তী সময়ে কার্যকর হবে। যেমন আগামীতে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে সরকারি দল, বিরোধী দল ও জুডিশিয়ারির একজন প্রতিনিধিসহ একটা নিরপেক্ষ কমিটির মধ্য দিয়ে। সেটা পরে সংবিধান সংশোধন করে বাস্তবায়ন করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাজীপুরে সাংবাদিককে কুপিয়ে খুন
পরবর্তী নিবন্ধবান্দরবানে উদ্ধার, ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে ঠাঁই পেল বিরল দুই রাজ ধনেশ