থেমে গেল জীবনের গান, নামল সন্ধ্যা

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৬:১৩ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি উপলক্ষে তিনি গেয়েছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু তুমি ফিরে এলে’ গানটি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রথম একুশে ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় পল্টন ময়দানে একটি উন্মুক্ত কনসার্টে গাইতে এসেছিলেন।
বাংলা গানে স্বর্ণযুগের শিল্পীদের শেষ তারকা, বাংলা গানের প্রবাদপ্রতীম শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ও চলে গেলেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা পিটিআই। তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
গত ২৬ জানুয়ারি রাতে জ্বর নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সন্ধ্যা। পরে তাকে অ্যাপোলো হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির একদিন আগেই ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মশ্রী খেতাব প্রত্যাখ্যান করে আলোচনায় এসেছিলেন কিংবদন্তি এ সঙ্গীতশিল্পী। খবর বিডিনিউজের।
তার মৃত্যুুর খবরে বাংলাদেশেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেক জনপ্রিয় গান গেয়ে সঙ্গীতপ্রেমীদের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়া এ শিল্পীর মৃত্যুতে সবাই সেই সোনালী সময়ের গানে যেন ফিরে গেছেন। শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৩১ সালে জন্মগ্রহণকারী এ শিল্পী ভারতের বাংলা চলচ্চিত্রে জনপ্রিয় অনেক গান গেয়েছেন, যেগুলোতে কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনকে ঠোঁট মেলাতে দেখেছেন দর্শক। পর্দায় উত্তম-সুচিত্রা জুটির অনেক রোমান্টিক গানের নেপথ্যে ছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। তার মধ্যে রয়েছ, এ শুধু গানের দিন, এই পথ যদি না শেষ হয়, এই মধুরাত, গানে মোর কোন ইন্দ্রধনু, কে তুমি আমারে ডাক, মায়াবতী মেঘে এল যে তন্দ্রা-এর মতো গান।
বাংলা সংগীত জগতের স্বর্ণযুগের প্রায় সব সুরকারের সুরে গান গেয়েছেন সন্ধ্যা। শচীন দেব বর্মন, অনুপম ঘটক, রবীন চট্টোপাধ্যায়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সলিল চৌধুরীর মতো দিকপালদের সুরে গলা দিয়েছেন। আবার নতুন প্রজন্মের সংগীতকার কবীর সুমনের কথা ও সুরে গেয়েছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে উদ্বাস্তুদের জন্য অর্থ সংগ্রহে যোগ দিয়েছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।
১২ বছর বয়সে কলকাতা আকাশবাণীর ‘গল্পদাদুর আসর’-এ প্রথম গেয়েছিলেন গীতিকার অজয় ভট্টাচার্যের লেখা একটি গান। ১৩ বছর ১০ মাস বয়সে প্রথম বেসিক রেকর্ড করেন গিরিন চক্রবর্তীর কথা ও সুরে। এইচএমভি থেকে প্রকাশিত হয় সেই রেকর্ড। এর এক পিঠে ছিল ‘তুমি ফিরায়ে দিয়ে যারে’, উল্টো পিঠে ‘তোমারো আকাশে ঝিলমিল করে চাঁদের আলো।’
এর বছর দুয়েক পরে কিংবদন্তি সুরকার রাইচাঁদ বড়ালের সুরে ‘অঞ্জনগড়’ ছবিতে এবং রবীন চট্টোপাধ্যায়ের সুরে ‘সমাপিকা’ সিনেমায় গান রেকর্ড করেন। গান শিখেছেন যামিনী গঙ্গোপাধ্যায়, ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলি, চিন্ময় লাহিড়ী, এ কানন, ডিটি যোগী, গণপত রাও, জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ ও সুরেশচন্দ্র চক্রবর্তীর কাছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২০২০ সালের সেরা চলচ্চিত্র গোর ও বিশ্বসুন্দরী
পরবর্তী নিবন্ধপৃথক মামলায় পাঁচ ব্যবসায়ীকে ৫ মাসের সাজা