শীঘ্রই পুনর্গঠন করা হবে নগর বিএনপির আওতাধীন থানা ও ওয়ার্ড কমিটি। বিগত সময়ে রাজপথে থেকে দলের ‘আন্দোলন–সংগ্রামে’ যারা সক্রিয় ছিলেন, দলের জন্য ‘ত্যাগ’ স্বীকার করেছেন তাদের প্রাধান্য দিয়ে যোগ্যতার মানদণ্ডে কমিটিগুলো করা হবে। নবগঠিত নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির প্রথম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল সকালে নগরের একটি রেস্টুরেন্টে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখার উপর জোর দেন বক্তারা। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান।
মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, নির্বাচন উপযোগী প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধনের মাধ্যমে দ্রুত একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করা এবং দেশে সার্বিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বিএনপি সর্বদাই অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে থাকবে। দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীলতা আনয়ন ও দেশের স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখা এবং জনকল্যাণের লক্ষ্যে জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের বিকল্প নেই। পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের যে কোনো অপতৎপরতা রুখতে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে সর্বদাই সজাগ ও সক্রিয় রয়েছেন।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, দেশ ও দলের বিরুদ্ধে যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আমাদেরকে সর্বদা ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিভাজন বা অনৈক্য কখনোই দল সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দলকে এগিয়ে নিতে চলমান ঐক্য যে কোনো মূল্যে আমাদেরকে ধরে রাখতে হবে।
হারুনুর রশিদ বলেন, বিএনপি জনগণের দল।
বিএনপির প্রতি জনগণের আস্থা অটুট রাখতে দলের নেতাকর্মীদেরকে সকল লোভ–লালসার ঊর্ধ্বে উঠে জনকল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হবে।
ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, নতুন কমিটির নব যাত্রার মাধ্যমে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে সাংগঠনিকভাবে আরও বেশি শক্তিশালী ও সুসংগঠিত হবে। কার্যকর সাংগঠনিক রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে দলে নতুন নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে হবে।
আবুল হাশেম বক্কর বলেন, পতিত স্বৈরাচারের দোসররা ষড়যন্ত্র করলেও বিএনপি এদেশের জনগণকে সাথে নিয়ে তা রুখে দিবে।
এরশাদ উল্লাহ বলেন, সাংগঠনিক রাজনীতিকে এগিয়ে নিতে নিজেদের মধ্যে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। পারস্পরিক ঐক্য ও সমপ্রীতির মধ্য দিয়ে দলকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়াটাই মহানগর বিএনপির নতুন কমিটির লক্ষ্য।
সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে নগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান আজাদীকে বলেন, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিএনপিকে পুনর্গঠন করে শক্তিশালী করা হবে। আমরা আবারও বসব।
এদিকে সভায় ‘স্বৈরাচার হাসিনা বিরোধী ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে নিহত দলীয় নেতাকর্মীসহ অন্যান্য শহীদগণ’ এবং সামপ্রতিক সময়ে পরলোকগত বিএনপির দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য বেগম রোজী কবিরসহ মহানগর বিএনপির প্রয়াত নেতাকর্মীদের স্মরণে সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান উত্থাপিত শোক প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
উল্লেখ্য, প্রায় চার মাসের মাথায় গত ৩ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ করা হয় বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। এদিন ৫৩ সদস্যের কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। এতে ১৬ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। এর আগে গত ৭ জুলাই এরশাদ উল্লাহকে আহ্বায়ক ও নাজিমুর রহমানকে সদস্য সচিব করে মাত্র দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র।