থাকবেন ছয় দেশের ৭৫০ চিকিৎসক-গবেষক,চট্টগ্রামে হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

শুক্রবার চতুর্থবারের মতো এই আয়োজন করছে মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৬ নভেম্বর, ২০২৫ at ৭:৪৯ পূর্বাহ্ণ

চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন সম্ভাবনা, আবিষ্কার এবং এই খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহারসহ নানা বিষয়ে নতুন গবেষণা নিয়ে আগামী শুক্রবার চটগ্রামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চিকিৎসা গবেষকদের এক আন্তর্জাতিক মিলনমেলা। চতুর্থবারের মতো এ আয়োজন করছে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন। বাংলাদেশসহ যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, মিশর, ভারত ও নেপাল থেকে ৭৫০ জনের বেশি চিকিৎসক, গবেষক, শিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থী এতে অংশ নেবেন। আগামী শুক্রবার সকাল ৮টায় নগরীর চট্টগ্রাম ক্লাবে সম্মেলন শুরু হবে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান আয়োজকরা। এতে বক্তব্য দেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. অসীম কুমার বড়ুয়া, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম জালাল উদ্দিন, সেক্রেটারি ও সদস্যসচিব অধ্যাপক ডা. অলক নন্দী এবং হাসপাতালের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম।

আয়োজকরা জানান, শুক্রবার সকাল ৮টায় সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হলেও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে সকাল সাড়ে ১১টায়। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। বিশেষ অতিথি থাকবেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ওমর ফারুক ইউসুফ। উদ্বোধন করবেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। দিনব্যাপী ১৭টি সেশনে উপস্থাপন করা হবে ৮৯টি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ। এর মধ্যে আছে ৪০টি মেডিসিন, ২৫টি সার্জারি, ১২টি গাইনী এবং ডেন্টাল, বেসিক মেডিসিন ও মেডিকেল শিক্ষা সংক্রান্ত আরো ১২টি গবেষণা। আগের দিন দুটি ও পরের দিন আরো দুটি হাতেকলমে বৈজ্ঞানিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে।

বৈজ্ঞানিক সেমিনারকে কেন্দ্র করে দেশিবিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অংশগ্রহণে হাসপাতালে ৬ জন থাইরয়েড রোগীর অপারেশনবিহীন অস্ত্রোপচার করা হবে। ‘থার্মাল এবলেশন’ নামের এই সর্বাধুনিক পদ্ধতিতে থাইরয়েড নডিউল বা গলগণ্ড রোগ কাটাছেঁড়া ছাড়াই চিকিৎসা দেয়া হবে।

ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিভাগ জানায়, বাংলাদেশে এটি এ ধরনের প্রথম ওয়ার্কশপ। এতে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় চিকিৎসকরা যৌথভাবে হাতেকলমে থার্মাল এবলেশন প্রযুক্তি প্রদর্শন করবেন, যা তরুণ চিকিৎসকদের জন্য যুগান্তকারী অভিজ্ঞতা হবে।

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ মো. মোরশেদ আলম বলেন, গবেষণার মাধ্যমেই চিকিৎসার অগ্রগতি সম্ভব। ৮৯টি গবেষণা উপস্থাপন ও থার্মাল এবলেশনের মতো নতুন প্রযুক্তির হাতেকলমে প্রদর্শন এ সম্মেলনকে আরো সমৃদ্ধ করবে।

টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. অসীম কুমার বড়ুয়া বলেন, পাঁচ দেশের গবেষকরা তাঁদের গবেষণা ও প্রযুক্তি শেয়ার করবেন। থার্মাল এবলেশন আমাদের দেশে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।

ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম জালাল উদ্দিন বলেন, দেশে প্রতি বছর প্রায় তিন হাজার চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণা প্রকাশিত হলেও বাস্তবে সেগুলোর প্রয়োগ কম। এ ধরনের সম্মেলন গবেষণা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করবে।

সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. অলক নন্দী জানান, বিভিন্ন সেশনে গবেষকেরা হাতেকলমে চিকিৎসার সর্বশেষ উদ্ভাবন উপস্থাপন করবেন। নবীন চিকিৎসকদের জন্য এটি বিশাল প্রাপ্তি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন কমিটির ট্রেজারার অধ্যাপক ডা. আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, সায়েন্টিফিক সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. সঞ্জয় কান্তি বিশ্বাস, প্রচার সেক্রেটারি ও ডেন্টাল ইউনিটের প্রধান ডা. মো. কামরুল হাসান, অফিস সেক্রেটারি ডা. হাদী মো. হাবিব উল্লাহ, শিক্ষক সমিতির সংস্কৃতি ও বিনোদন সম্পাদক ডা. ফাহিম হাসান রেজা প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাসুলের (সা.) শিক্ষাদান পদ্ধতি কল্যাণকামিতায় ভরপুর ছিল
পরবর্তী নিবন্ধভোট : লটারিতে নির্বাচিত ৬৪ জেলার এসপি