তৈরি হয়ে গেছে লড়াইয়ের মঞ্চ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ১৭ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ

করোনার কারণে ২০২০ এবং ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি ঐতিহাসিক জব্বারের বলী খেলা। ২০২২ সালের আসরটিও যখন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছিল তখন সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল বলীখেলার ১১৩ তম আসর। তবে এবারের আসরের জন্য আগেভাগেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বলী খেলা আয়োজক কমিটি। এবারের বলী খেলার ১১৪ তম আসরটি বসতে যাচ্ছে আগামী ২৫ এপ্রিল। সেটা হতে পারে ঈদুল ফিতরের পরদিন। তাই আশা করা হচ্ছে এবারের আসরটি চট্টগ্রামের মানুষের জন্য ঈদের আরেকটি আনন্দের দিন হতে পারে। কারণ ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রামবাসী বলী খেলাকে উপভোগ করবে মনভরে।

এবারের বলী খেলার আসরটিও হওয়ার কথা ছিল লালদীঘি মাঠের বাইরে রাস্তার উপর মঞ্চ বানিয়ে। সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন যেহেতু লালদীঘি মাঠটি দীর্ঘ সময় ধরে সংস্কার করা হয়েছে। মাঠটিকে খেলার উপযোগী করা হয়েছে। তাই বাঁশ পুঁতে মাঠটি নষ্ট করা হবে না। কিন্তু সিটি মেয়রের সংবাদ সম্মেলনের দুদিন না যেতেই ঘোষণা করা হলো মাঠের ভেতরেই অনুষ্ঠিত হবে এবারের বলী খেলা। আর সে অনুযায়ী মঞ্চ নির্মাণ করা হচ্ছে লালদীঘি মাঠে। অনেকেই মনে করছেন যেহেতু লালদীঘি মাঠকে ঘিরে জব্বারের বলী খেলার ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে তাই মাঠেই যেন শোভা পায় এই খেলা। আর সে জন্যই আবারো মাঠে ফিরছে জব্বারের বলী খেলা। গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে মঞ্চ প্রায় প্রস্তুত হয়ে গেছে। ২০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ২০ ফুট প্রস্থের মঞ্চটির উচ্চতা ৫ ফুট। যেখানে সারা দেশ থেকে আগত বলীরা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্য লড়াই করবেন। এখন বালি দিয়ে মঞ্চটিকে পুরোপুরি প্রস্তুত করার অপেক্ষা।

আজ থেকে ১১৪ বছর আগে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে এলাকার যুবকদের সংগঠিত করতে বদরপাতি এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার যে বলী খেলার প্রচলন করেছিলেন কালের পরিক্রমায় সে বলী খেলা এখন দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশের কাছেও বিশাল ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। দেশের এক সময়ের ঐতিহ্য গরুর লড়াই কিংবা বলী খেলা এখন আর নেই বললেই চলে। সবেদন নীলমনি হিসেবে আছে কেবল এই জব্বারের বলী খেলা। আর সেই জব্বারের বলী খেলার ১১৪ তম আসর বসতে আর মাত্র কয়টা দিন বাকি। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলার বলীরা নিজেদের প্রস্তুত করে নিয়েছেন শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে। এখন দেখার অপেক্ষা আগামী ২৫ এপ্রিল কার মাথায় উঠে জব্বারের বলী খেলার ১১৪ আসরের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট।

এদিকে বলী খেলা আয়োজক কমিটির কর্মকর্তা জামাল হোসেন জানিয়েছেন এবারের আসরে খেলা পরিচালনার বিষয়ে একটি নীতিমাল নির্ধারণে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে কিভাবে খেলাটাকে সুন্দর করা যায় এবং ত্রুটিমুক্ত করা যায় সে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আর সে জন্য তারা বিভিন্ন জনের পরামর্শও চেয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য এই ঐতিহ্যের বলী খেলাটাকে আরো সুন্দর করে সবার কাছে উপস্থাপন করা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভুসির সাথে লাল রং মিশিয়ে তৈরি হয় ভেজাল মরিচের গুঁড়া
পরবর্তী নিবন্ধদুর্গম লক্ষ্মীছড়িতে দেশি মুরগির বিপ্লব