আজও বাতাসে আমি তোর গায়ের সুগন্ধ খুঁজে পাই, তোর হৃদপিণ্ডের প্রতিটি বিট আমার হৃদপিণ্ডে বেজে ওঠে। চলার পথে চপ্পলের আওয়াজ এখনো আমার কানে বাজে। তোর মামনি ডাক টা আমার হৃদয়ে ঝড় তোলে। বড্ড জানতে ইচ্ছে করছে, এমনভাবে তুই কি আর কাউকে মামনি ডাকিস? যদি ডাকিস, সে কি আমার মত করে তোকে ভালবাসে? খাইয়ে দেয়? শার্টটা ঠিকমত ইন করে দেয় তো? ‘আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে’ কবিতাটা কি আর কাউকে শোনাস? সেই মা কি তোকে গান শুনিয়ে ঘুম পাড়ায়? জানিস তো, আমি এখনো তোর সব জিনিস গুছিয়ে রেখেছি। তোর ছবি আঁকার খাতা, তোর রেজাল্ট কার্ড, তোর পড়ার বইগুলো। সৌরভ গাঙ্গুলির সাইন করা ছোট্ট ক্রিকেট ব্যাট এখনো আছে।তোর রিমোট কন্ট্রোল গাড়ি, সব খেলনাগুলো এখনো সযত্নে আগলে রেখেছি। এমনকি তোর জলখাবারের থালা গ্লাস সব জিনিস। সেই যে একটা পাখি বাঁশি কিনেছিলিস, সেটা এখনো আছে। ওটাতে আমি মাঝে মাঝে ফু দিয়ে তোকে খুঁজে বেড়াই। তখন তুই চুপটি করে আদর দিয়ে আবার কোথায় হারিয়ে যাস? তুই খেলবি বলে তোর ক্যারামবোর্ডটা আমি বারান্দায় এখনও যত্নে রেখে দিয়েছি। তুই কি চুপি চুপি এসে খেলিস? জানিস তো ঈশ্বর ভীষণ নিষ্ঠুর এবারের ঝরে সে বোর্ডটা খানিকটা ভেঙে গেছে। তোর কি ভীষণ মন খারাপ হয়েছে? আমি যখন তোর কাছে পৌঁছবো, ঠিক তেমনি একটি বোর্ড কিনে দেবো। তুই আর আমি দুজনে মিলে খেলব। আমি ইচ্ছে করে হেরে যাবো আর তুই খিলখিল করে হাসবি। এখন তোর ৩২, পরিপূর্ণ এক যুবক। আচ্ছা বলতো, তুই কি ঠিক আগের মতো করেই কথা বলিস? এখনো কি চপ্পলের আওয়াজ তোলে হাঁটিস? তোকে আমার ভীষণ আদর করতে ইচ্ছে করছে বাবা। আমাকে মা বানিয়ে তুই কেন চলে গেছিস? এমন দিনে পৃথিবীর সমস্ত আনন্দ নিয়ে তুই আমার ভুবনে এসেছিলিস। নক্ষত্রালোকে আমার ভালোবাসা পাঠালাম।