গল টেস্টে আশাব্যঞ্জক নৈপুণ্যের পর কলম্বো টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হার টাইগার শিবিরে হতাশার জন্ম দিয়েছে। তবে টেস্ট সিরিজের এই হতাশা পেছনে ফেলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে নতুন করে শুরু করতে চায় সফরকারী বাংলাদেশ। আজ বুধবার কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে স্থায়ী অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু করবেন মেহেদি হাসান মিরাজ। লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজের ঠিক আগে এক বছরের জন্য ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে নাজমুল হোসেন শান্তর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন মিরাজ। ওয়ানডের আগে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১–০ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। প্রথম টেস্ট ড্র হলেও দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ইনিংস এবং ৭৮ রানে হারে টাইগাররা।
প্রথম টেস্টে ব্যাটে–বলে দারুণ পারফরমেন্সে আধিপত্য বিস্তার করে ম্যাচ ড্র করে বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে ব্যাটিং ব্যর্থতায় হারে টাইগাররা। সফরের শুরুতে হওয়া টেস্ট সিরিজে হারের লজ্জা পায় বাংলাদেশ। তাই টেস্ট সিরিজের ব্যর্থতা ওয়ানডে সিরিজে প্রভাব ফেলতে পারে বলে অনেকেই ধারণা করছেন। তবে ওয়ানডে সিরিজে ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ অধিনায়ক মিরাজ। তিনি জানান, ওয়ানডে সিরিজে লড়াই হবে।
এখন পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫৭ ম্যাচ খেলে মাত্র ১২টি জিতেছে বাংলাদেশ। ৪৩টিতে হার ও দুটি ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। তবে, দু’দলের শেষ পাঁচ দেখায় বাংলাদেশ তিনটিতে জিতেছে এবং দুটিতে হেরেছে। ২০২৪ সালের মার্চে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ–শ্রীলঙ্কা। তিন ম্যাচের সিরিজ ২–১ ব্যবধানে জিতেছিল টাইগাররা। এরপর আফগানিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুটি তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের কাছে ২–১ ব্যবধানে হারের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল টাইগাররা।
শান্তর অনুপস্থিতিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মিরাজ। এরপর গত ফেব্রুয়ারিতে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নেয় বাংলাদেশ। ‘এ’ গ্রুপে তিন ম্যাচের মধ্যে প্রথম দুই ম্যাচে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় টাইগারদের। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ–পাকিস্তান ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আর কোন ওয়ানডে খেলেনি টাইগাররা।
শ্রীলঙ্কার মাটিতে বাংলাদেশের ওয়ানডে রেকর্ডও হতাশাজনক। ২৪ ম্যাচ খেলে মাত্র ২টিতে জয়, ২০টিতে হার ও ২টি পরিত্যক্ত হয়েছে। ২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কার মাটিতে সর্বশেষ তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর ২০২৩ সালে এশিয়া কাপ খেলতে আবারও শ্রীলঙ্কা সফর করে টাইগাররা। লঙ্কার মাটিতে দুই ম্যাচ খেলে দু’টিতেই হেরেছে তারা। শ্রীলঙ্কার মাটিতে সর্বশেষ ছয় ম্যাচের একটিতেও জয় নেই বাংলাদেশের।
ইনজুরি থেকে সুস্থ হয়ে শ্রীলঙ্কা সিরিজ দিয়ে দলে ফিরেছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। ফলে টাইগারদের পেস আক্রমণকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফরমেন্সের সুবাদে আড়াই বছর পর ওয়ানডে দলে ফিরেছেন মোহাম্মদ নাইম। আরও ফিরেছেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে সুযোগ না পাওয়া উইকেটরক্ষক–ব্যাটার লিটন দাস, মিডল অর্ডার ব্যাটার শামীম পাটোয়ারী এবং বাঁ–হাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম। এদের নিয়েই শক্তিশালী শ্রীলঙ্কান দলের মোকাবেলায় টাইগাররা কী করতে পারেন সেটি আজ মাঠেই প্রমাণ দিতে হবে।