দৈনিক আজাদী পত্রিকার ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায় পত্রিকাটি ১৯৬০ সালের ৫ ই সেপ্টেম্বর ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক সম্পাদিত ও কোহিনুর ইলেকট্রিক প্রেস থেকে মুদ্রিত একটি বাংলা দৈনিক যা চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত হয়। দৈনিক আজাদী পত্রিকার প্রকাশকাল পরবর্তী সময়টি ছিল দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ভীষণ টালমাটাল অবস্থা। বাঙালি জাতির বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬এর ছয় দফা, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিরুদ্ধে আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বাধীনতা আন্দোলনের বিজয় দ্বারে যাত্রা, আর এসব গণ মানুষের আন্দোলন সংগ্রামে দৈনিক আজাদী বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার পথ ধরে গণতান্ত্রিক শক্তির পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল। পাকিস্তান আমলে সংবাদ পত্রের মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রশ্নে দৈনিক আজাদী আপোষহীন সাহসী ভূমিকা পালন করে যার কারণে সরকার দৈনিক আজাদীকে কালো তালিকাভুক্ত করে এক বছর সরকারি অনুদান–প্রদান থেকে বঞ্চিত করে রাখে। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশ যখন সামরিক বাহিনীর কবলে তখনও সরকার আজাদী প্রকাশনা প্রায় ৩ মাস বন্ধ রেখেছিল। পরবর্তীতে চূড়ান্তভাবে দেশ স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নির্ভীক সাংবাদিকরা পত্রিকার প্রকাশনা চালু রেখেছিল। ১৬ ডিসেম্বর ৭১ এ পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণের খবর পরদিন দৈনিক আজাদীতে লাল কালির ব্যানার হেডলাইনে প্রকাশিত হয়। শুরু থেকে পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার। ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর জামাতা অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ পত্রিকাটির সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০৩ সালে তাঁরও মৃত্যুর পর ইতিপূর্বে ব্যবস্থাপনা সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা আব্দুল খালেক ইঞ্জিনিয়ারের সুযোগ্য পুত্র আব্দুল মালেক পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্বে নিয়োজিত হন।
গর্বের বিষয় হলো স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম প্রকাশিত পত্রিকা দৈনিক আজাদী শুরু থেকেই পাঠক প্রিয় পত্রিকা হিসেবে শির উঁচু করে অগ্রসরমান। ৬৫ বছর অতিক্রান্ত হচ্ছে যোগ্য নেতৃত্বের কারণে এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে পাঠক প্রিয়তা অর্জনের মাধ্যমে। আজাদী মানেই তথ্য উপাত্তের মাধ্যমে সঠিক সময়ে জনগণের দোরগোড়ায় সঠিক খবর তুলে ধরা। নিরপেক্ষতার সীমারেখায় পরিচ্ছন্ন ও নন্দিত পরিবেশে গণমানুষের মনের কথার সঠিক চিত্রায়নে আজাদির ঈর্ষণীয় সফলতা এসেছিল। প্রখর ধী–শক্তি সম্পন্ন সাংবাদিকতায় নিবেদিত প্রবাদ তুল্য প্রাণপুরুষ আব্দুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ এবং বর্তমান সম্পাদক এম এ মালেকের তীক্ষ্ন মেধা ও বুদ্ধিদীপ্ত প্রতিভার ওপর ভিত্তি করে সময়ের বিবর্তনে এই তিন ব্যক্তির সুনির্দিষ্ট স্বাতন্ত্র্য নির্দেশনায় আজাদী ভিন্ন মাত্রায় জনপ্রিয়তা নিয়ে সগৌরবে দেশের বহুল প্রচারিত দৈনিক পত্রিকা হিসেবে সমাদৃত। একসময়ের বার্তা সম্পাদক সাধন ধর, সাহিত্যিক সাংবাদিক অরুণ দাশগুপ্ত, লেখক বিমলেন্দু বড়ুয়াসহ আরো অনেকে সৃজনশীল লেখনীর মাধ্যমে সাংবাদিকতার আদর্শকে ফুটিয়ে তুলতে আজাদী পরিবারের সদস্য হয়ে নিষ্ঠা, আন্তরিকতা, শ্রম, মেধা নিয়োজিত করে আজাদীর সফল পথ চলায় সচেষ্ট অবদান রেখেছিল যার ধারাবাহিকতা নতুন কর্ম কৌশল ও উদ্যোগ সবেগে অব্যাহত রয়েছে।
বীর চট্টলার অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গের জন্ম জনপদ রাউজান উপজেলার সুলতানপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক। পিতা মোহাম্মদ বেলায়েত আলী চৌধুরী ও মাতা ফজিলাতুন্নেসার কোল আলোকিত করে ২৭ জুলাই ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে জন্ম হয় এই মহান ব্যক্তিটির। শৈশবে গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে রাউজানের খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর আর এসি ইনস্টিটিউশন থেকে ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে মাট্রিকুলেশন এবং ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে ইন্টারমেডিয়েট পাস করেন। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতনামা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে প্রথম বিভাগ স্বর্ণপদকসহ তরিৎ প্রকৌশলে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষকতার মাধ্যমে তিনি তার কর্ম জীবন শুরু করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কিছু সময় রেঙ্গুনে অতিবাহিত করেন। চট্টগ্রাম ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানিতে প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করে চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের কাজে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। পরবর্তীতে চাকরি ছেড়ে তিনি ব্যবসা শুরু করেন। ১৯২৯ সালে পুস্তক প্রকাশনা ও বিক্রির প্রতিষ্ঠান কোহিনুর লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫০ সালে তার সম্পাদনায় ‘কোহিনুর’ নামে একটি সাপ্তাহিক সাময়িকী প্রকাশিত হয়। ১৯৬০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দৈনিক আজাদী সম্পাদনার মাধ্যমে প্রকৌশলীর হাত দিয়ে ন্যায়নিষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার আলোকবর্তিকা জ্বলে উঠে। সাংবাদিকতার পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক অনেক শিশুপাঠ্য শিশুতোষ গ্রন্থসহ বহু গ্রন্থ রচনা করে পাঠক সমাদৃত হয়েছিলেন। ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক এর বহুবিধ গুণের প্রতি সম্মান জানিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নগরের আন্দরকিল্লায় ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক চত্বর প্রতিষ্ঠা করেছে। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক মিলনায়তন প্রতিষ্ঠাসহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক এর নামে শিক্ষাবৃত্তি চালু আছে। ১৯৬২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ আব্দুল খালেক সাহেবের মৃত্যুর পর তাঁরই জামাতা অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ পত্রিকাটির সম্পাদকের দায়িত্বে নিয়োজিত হন।
পৈতৃক নিবাস রাউজানের সুলতানপুর গ্রামের দারোগা বাড়ির অন্যতম কৃতী সন্তান অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ সাহেবের জন্ম হয় পিতার কর্মক্ষেত্র ভারতের বিহার রাজ্যর রাজধানী পাটনায়। তিনি তার পূর্বসূরী শ্বশুর ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেকের মতো রাউজানের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর আর এ সি ইনস্টিটিউশন থেকে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ১৯৪২ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন পরবর্তীতে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাসে এম এ ডিগ্রি লাভ করেন। বাবার মৃত্যুর অব্যাবহিত পরে সংসারের খরচ চালানো এবং নিজের পড়ালেখার খরচ সামলাতে হিমসিম খেয়ে শুরু করে দেন ছোট খাট ব্যবসা। ছাত্র জীবন থেকে আয় উপার্জনের পথ খুঁজতে গিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা ও চাকরিতে যোগ দিয়ে কোন কিছুতেই মন বসাতে পারেননি কারণ এসব ক্ষেত্রে অন্যায় ও অনিয়মের সাথে সমঝোতা করার মন মানসিকতা তার ছিল না। পরবর্তীতে দুটি স্কুলের শিক্ষকতার পর নাজিরহাট কলেজে অধ্যাপনায় যোগদান করেন। ব্যবসা, শিক্ষকতার পর তিনি ব্যাংকের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন কিন্তু সে চাকরি তিনি বেশি দিন করেননি কারণ সে ক্ষেত্রেও ছিল নিজের বিবেকের সাথে তার মনস্তাত্ত্বিক বিরোধ। স্বাধীনচেতা নির্ভীক কর্মোদ্যোগী ব্যক্তিত্বের অধিকারী এই মহৎ ব্যক্তিটি মনের প্রচন্ড দৃঢ়তা নিয়ে জীবন পথে এগিয়ে যেতেন। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে বাঙালির আত্মনিয়ন্ত্রণ ও স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতিটি সংগ্রামে তিনি নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছিলেন। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে দেশে সামরিক শাসন জারি এবং সামরিক বাহিনীর হিংস্র দমননীতি চলছিল ঠিক তখন অনেক সচেতন বাঙালির মতো নীরব যন্ত্রণা ভোগ করছিলেন অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ। পরাধীনতার এ গ্লানিময় মুহূর্তে তিনি তাঁর জীবনের মূল পেশাটি বেছে নেন এবং সেই পেশাটি হল সাংবাদিকতা । ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হলে মাওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সাংগঠনিক শক্তির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। সাংবাদিক হিসাবে খ্যাতি অর্জন করলেও মূলত তিনি ছিলেন বিশাল মাপের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে রাউজান হাটহাজারী নির্বাচনী এলাকায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বিজয়ী হয়ে তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন। রাউজান উপজেলার কদলপুর গ্রামে আমার পৈতৃক নিবাস হওয়ার সুবাদে সেই নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করে এ মহৎ ব্যক্তিকে কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। আমার নির্বাচনী কেন্দ্র কদলপুর হামিদিয়া মাদ্রাসার প্রাঙ্গণে ঘাসের উপর বসে এ মৃদুভাষী, নিরংকারী সাদা মনের মানুষটির সাথে ঘণ্টাখানেক কাটানোর স্মৃতি দীর্ঘ ৫৫ বছর পরও আমার মানস চক্ষে ভেসে উঠে। অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ দেশের বরেণ্য সাংবাদিক, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও দেশের অন্যতম সংবিধান প্রণেতা। একজন খাঁটি বাঙালি হিসেবে তিনি ছিলেন শিক্ষকতা, রাজনীতি ও সাংবাদিকতার অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় আদর্শ। স্বাধীনতা যুদ্ধ ও স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে তার মহৎ অবদানকে স্মরণে রেখে ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেন। শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে তার স্মৃতি নির্মল আলোতে সমুজ্জ্বল থাক্্ সবার অন্তরে।
সাংবাদিকতার জগতে প্রবাদ পুরুষ, বর্তমান আজাদী পত্রিকার কর্ণধার সুলেখক, সুবক্তা, সাংবাদিকতার অত্যুজ্জ্বল নামটি এম এ মালেক। তিনি সংবাদ ভালোবাসেন, সাংবাদিকতাকে ভালোবাসেন। আজকে দৈনিক আজাদীকে অনন্য উচ্চতম পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে তাঁর নিরলস শ্রম, কঠোর অধ্যবসায় এবং সৃজনশীল কর্মস্পৃহা নিবিড়ভাবে প্রেরণা যুুগিয়েছে। এর পেছনের অনুপ্রেরণা বাবার স্বপ্ন পূরণের দুর্নিবার প্রচেষ্টা। সমগ্র দেশে, বিশেষ করে বিশ্বের দেশে দেশেও বর্তমান সময়ে দৈনিক আজাদী পত্রিকা অনিন্দনীয় ও অভাবনীয় জনপ্রিয়তার পেছনে যে ব্যক্তিটির নাম উঠে আসে তিনি হলেন প্রবীণ দূরদর্শী ও কর্মনিষ্ঠ সাংবাদিক ব্যক্তিত্ব এম এ মালেক, চট্টগ্রামের সংবাদপত্র শিল্পের অন্যতম আলোকবর্তিকা। বর্তমান আজাদী পত্রিকার প্রাণপুরুষ এম এ মালেকের হাত ধরে উঠে আসে সাংবাদিকতার যুগোপযোগী সৃষ্টি কর্মের নির্দেশনা ও সৃজনশীল সাহিত্যকর্ম সৃষ্টির নব নব উদ্যোগ। এই মহান ব্যক্তিটির বিচরণ শুধু সংবাদপত্র শিল্পের গণ্ডীতে সীমাবদ্ধ নয়। সাহিত্য সংস্কৃতিসহ সমাজের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে দৈনিক আজাদীকে তিনি সফলতার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছেন। আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর বীরদর্পে বিচরণ সত্যিই প্রশংসনীয়। সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘একুশে’ পদক এ ভূষিত হন। শুধু সাংবাদিকতা নয়, চিকিৎসা, সেবা, অন্ধত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র্য বিমোচন এবং শিক্ষার প্রসারে তাঁর অনন্য অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বাড়ি গাড়ি অর্থ উপার্জন তার লক্ষ্য না তাঁর স্বপ্ন হচ্ছে বাবার রেখে যাওয়া পত্রিকাটিকে পাঠকের মাঝে গৌরবের সাথে বাঁচিয়ে রাখা। তিনি আজাদীকে ভালোবেসে তার স্বপ্নকে সফলতার শীর্ষে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন।
দৈনিক আজাদীর প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক, ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক এর পরে সাংবাদিকতার কিংবদন্তি মহৎ যে নামগুলো আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে তাঁদের মধ্যে অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ সাংবাদিকতার বর্তমান অন্যতম আলোকবর্তিকা জনাব এম এম মালেক সাহেব ও তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি যোগ্যতম পুত্র পরিচালনা সম্পাদক জনাব ওয়াহিদ মালেক। তাঁরা দৈনিক আজাদীকে পাঠকনন্দিত করার মহান কাজটি করে চলেছেন। আমাদের সাথে মানুষের বিশেষ করে কবি, সাহিত্যিক, লেখকদের প্রাণের মিলন, মনের মিলন এবং ভাবের মিলনে যে ব্যক্তিটি অনুঘটকের কাজে নিবেদিত, সবার ভালোবাসা শ্রদ্ধা ও সম্মানের ব্যক্তিত্ব তিনি হলেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত শিশু সাহিত্যিক দৈনিক আজাদী পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক রাশেদ রউফ। বহু গুণে গুণান্বিত সকলের শ্রদ্ধা ও সম্মানের প্রিয় মানুষটি রাশেদ রউফ। দৈনিক আজাদী পত্রিকার ব্যানারে কবি সাহিত্যিক প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট ও সংস্কৃতিসেবী সৃষ্টি ও প্রেরণার বিষয়ে তার অবদান অনস্বীকার্য।
প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে তিন প্রজন্মের স্বত্বাধিকারীদের সনিষ্ঠ আন্তরিকতা, কঠোর শ্রম ও মহৎ উদ্যোগে পা পা করে হেঁটে আসা আজাদীর অগ্রযাত্রা এখন সফলতার শীর্ষে। আজাদী চট্টগ্রামসহ দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বের সংবাদপত্র পাঠকদের কাছে একটি জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকা।
সাংবাদিকদের কঠোর শ্রম, ত্যাগ ও কর্মদক্ষতায় ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ ও সাংবাদিকতার আলোকবর্তিকা জনাব এম এ মালেকের দৈনিক আজাদী বর্তমান উচ্চতর স্থান থেকে উচ্চতম অবস্থানে পৌঁছে তার অতীত বর্তমান গৌরবকে ধারণ করে এগিয়ে চলছে। এখন পরিচালনা সম্পাদক হিসেবে আজাদীর কাণ্ডারী হলেন জনাব ওয়াহিদ মালেক। তাঁর সুদক্ষ পরিচালনায় ভবিষ্যৎ দিনগুলো আরো আলোকময় ও গৌরবদীপ্ত হয়ে সমুজ্জ্বল থাকবে– এই হোক আমাদের প্রাণের প্রত্যাশা। আজাদীর জয়যাত্রা অনির্বচনীয় আনন্দে প্রবহমান থাক।
লেখক: শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট ও প্রাক্তন অধ্যক্ষ, রাংগুনিয়া সরকারি কলেজ, বর্তমানে রেক্টর বনফুল আদিবাসী গ্রীন হার্ট কলেজ, ঢাকা।