তিন পুলিশ সদস্যের পর এবার প্রত্যাহার ওসি

চকরিয়া থানা হাজতে যুবকের মৃত্যু

চকরিয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ২৪ আগস্ট, ২০২৫ at ৭:২৪ পূর্বাহ্ণ

থানা হেফাজতে চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর দুর্জয় চৌধুরীর মৃত্যুর ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যের পর এবার ওসি মো. শফিকুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে গতকাল শনিবার বিকেলে তাকে প্রত্যাহার করে তার স্থলে নতুন ওসি হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে তৌহিদুল আনোয়ারকে।

এর আগে সাময়িক বহিষ্কার করে কক্সবাজার জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত ডিউটি অফিসারের দায়িত্ব পালনকারী এএসআই হানিফ মিয়া ও দুই কনস্টেবল (হাজতখানার সেন্ট্রি) ইশরাক হোসেন ও মহিউদ্দিনকে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিত দাস।

এদিকে থানা হেফাজতে রহস্যজনকভাবে মারা যাওয়া দুর্জয় চৌধুরীর লাশ উদ্ধারের ৩০ ঘণ্টা পর গতকাল বিকেলে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় শ্মশানে উপস্থিত থেকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেন চকরিয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) রূপায়ন দেব ও জেলা পুলিশের চকরিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিত দাস।

এ সময় বাবা কমল চৌধুরী দুর্জয়কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে বলেন, আমার ছেলে স্কুল ফান্ডের কোনো টাকা আত্মসাৎ করেনি। দুর্জয় খুবই মেধাবী এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ ছিল। শুধুমাত্র বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়মদুর্নীতির খতিয়ান তার ল্যাপটপে সংরক্ষিত থাকায় ভবিষ্যত পথের কাঁটা ভেবে পরিকল্পিতভাবে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। আর ওই রাতেই পুলিশের সাথে আঁতাত করে আমার সন্তানকে পিটিয়ে হত্যার পর দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা করেছে মর্মে প্রচার চালানো হয়েছে।

তিনি বলেন, শুক্রবার সকালে পুলিশ কর্তৃক হাজতখানার যে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখানো হয়েছে তা আগের রাত ১টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত সময়ের। এর পরবর্তী ফুটেজ কোথায় গেছে তা জনসম্মুখে প্রকাশেরও দাবি জানান তিনি। আর তাতেই স্পষ্ট হয়ে যাবে আমার সন্তান আত্মহত্যা করেছে নাকি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

এদিকে নাড়িছেঁড়া ধন দুর্জয় চৌধুরীকে হারিয়ে বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন মা বেবী চৌধুরী। কেন্দ্রীয় কালীমন্দিরের দরজায় গিয়ে ‘দুর্জয় কোথায় গেলি রে বাবা’ বলতে বলতে বিলাপ ধরে কান্না করছিলেন মা। এ সময় তার কান্না থামাতে চেষ্টা করছিলেন পাশে থাকা কয়েকজন নারী। মায়ের এ আহাজারিতে আশেপাশের সবার চোখ ভিজে উঠছিল।

উল্লেখ্যপৌরসভার ভরামুহুরী হিন্দুপাড়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কমল চৌধুরীর দুই পুত্রের মধ্যে ছিল দুর্জয় ছিলেন দ্বিতীয়। বড় সন্তান নৌবাহিনীতে অফিসার পদে কর্মরত রয়েছেন চট্টগ্রামে। একমাত্র কন্যা সন্তান ঋতু চৌধুরী চকরিয়া সরকারি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না তারাই পিআর পদ্ধতির বিরোধিতা করছে
পরবর্তী নিবন্ধথানায় মামলা করলেন নিহতের মা, গ্রেপ্তার ২