কক্সবাজারে কোরবানি পশুর হাট দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে বিশাল আকারের ষাড় ‘রাজা’। শুধু নামে নয়, চাল–চলন, বেশভূষায় রাজকীয় হওয়ায় খামার মালিক গরুটির নাম রেখেছেন রাজা। বর্তমানে রাজাকে দেখতে কেবল হাটে নয়, খামারেও ছুটে আসছেন ক্রেতাদের পাশাপাশি অনেক উৎসুক জনতা। আসন্ন কোরবানি ঈদ উপলক্ষে রাজার দাম হাঁকা হচ্ছে ১২ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে কয়েকজন ক্রেতা ৮ লাখ টাকায় কিনতে রাজি হলেও তা ভরণ–পোষণ আর লালন–পালনের ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে দাবি মালিকের। তিনি ন্যূনতম ৯ লাখ টাকা হলে ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন। কক্সবাজার সদর উপজেলার খরুলিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকার ‘আরসিজি এগ্রো’ খামার। শফিকুর রহমান ও তারেকুর রহমান নামের দুই ভাই মিলে গড়ে তোলেন খামারটি। বর্তমানে গৃহপালিত পশুর এ খামারে রয়েছে গরু ও ছাগলসহ বিভিন্ন পশু। এ খামার থেকে প্রায় সারা বছরই বিক্রিযোগ্য পশু হাটে নেওয়া হলেও এবারের কোরবানের ঈদের খামারের অন্যতম আকর্ষণ অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান প্রজাতির এই গরুটি। খামার মালিক গরুটির আদুরে নাম দিয়েছেন রাজা।
খামার মালিক তারেকুর রহমান বলেন, গত ৩ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার ফ্রিজিয়ান প্রজাতির গাভী থেকে এই বাছুরের জন্ম হয়। বর্তমানে সাড়ে পাঁচ ফুট উচ্চতা এবং সাড়ে ৮ ফুট দৈর্ঘ্যের এ গরুটির ওজন প্রায় ২৫ মণ। জন্মের পর থেকে গরুটির চাল–চলন আর অঙ্গ–ভঙ্গি ছিল রাজার মতনই। চলাফেরার মধ্যেও ছিল আভিজাত্যের ভাব। এমনকি রাজা যেখানে ঘুমায় সেখানে সিলিং ফ্যানও লাগাতে হয়েছে। জীবন যাপনে আভিজাত্যে ভরা গরুটির নাম রাখা হয়– রাজা, বলেন তারেকুর। খামার মালিক তারেকুর রহমান আরও বলেন, প্রতিদিন একাধিকবার সাবান ও শ্যাম্পু দিয়ে রাজাকে গোসল করানো হয়। দিনে অন্তত পাঁচবার খাবার দিতে হয়। সবুজ ঘাস, খৈল, চালের গুঁড়াসহ পুষ্টিকর খাবার ও রাজার যত্নের পেছনে দৈনিক খরচ হয় ১২শ থেকে দেড় হাজার টাকা। এছাড়াও নিয়মিত শারীরিক চেকআপ তো আছেই।
এবারের কোরবানি উপলক্ষে খামারটির অন্যতম আকর্ষণ রাজাকে একাধিকবার বাজারে তোলার কথা জানিয়ে খামার মালিক বলেন, ২৫ মণ ওজনের রাজার দাম দিয়েছি আমরা ১২ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে কয়েকজন ক্রেতা ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত চেয়েছে। কিন্তু গত ৩ বছরে রাজার লালন–পালনে যে ব্যয় হয়েছে তাতে ক্রেতাদের দামের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তবে ন্যূনতম ৯ লাখ টাকায় তিনি বেচার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
খামারটিতে রাজাকে লালন–পালন এবং দেখভালের দায়িত্বে আছেন মোহাম্মদ সালাম। তিনি জানান, কয়েকবার বাজারে তোলার পর থেকে ক্রেতা এবং উৎসুক জনতার অনেকেই রাজাকে দেখার জন্য খামারেও চলে আসছে।
নিজের সন্তানের মত করে রাজাকে বড় করেছি। চার–পাঁচ বেলা খাবার দিয়েছি। প্রতিদিন একাধিকবার শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করাই। গরম লাগলে ফ্যান চালু করে দিই। রাজা চলে গেলে আসলেই খুব খারাপ লাগবে আমার। বলেন সালাম।











