বিপিএলের মাঝপথেই জানিয়েছিলেন জাতীয় দলে আর ফেরা হচ্ছে না। সব সম্ভাবনার ইতি ঘটিয়ে তামিম ইকবাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বলে দিয়েছিলেন গুডবাই। বাংলাদেশের হয়ে ব্যাট হাতে প্রায় সব রেকর্ডই নিজের করে নেওয়া তামিমকে ছাড়াই এখন থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট চলবে নতুন এক গতিতে। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের কিংবদন্তি বনে যাওয়া তামিম ইকবালকে বিদায় দেওয়ার মঞ্চটাও প্রস্তুত করে রেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বিপিএল ফাইনালের দিনে মূল পুরস্কার বিতরণীর আগে তামিমকে তাই বিশেষ সংবর্ধনা জানাল বিসিবি।
শুরুতেই জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখানো হয় তামিম ইকবালকে নিয়ে তৈরি করা বিশেষ ভিডিও। যেখানে দেশসেরা এই ওপেনারকে নিয়ে কথা বলেছেন জাতীয় দলের সতীর্থ জাকির হোসেন, তানজিম হোসেন সাকিব ও ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বির মতো তরুণ তারকারা। ক্যামেরার সামনে ছিলেন তামিম ইকবালের একসময়ের সতীর্থ এবং বর্তমানে কোচ বনে যাওয়া মোহাম্মদ আশরাফুল। পরে তামিম ইকবালকে বিদায়ের পোডিয়ামে ডেকে নেওয়া হয় তার দীর্ঘদিনের দুই সতীর্থ মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে। অবশ্য বিদায়ী সংবর্ধনায় স্ত্রী ও দুই সন্তানকেও পোডিয়ামে সঙ্গে রেখেছেন তামিম। বিদায়ী সংবর্ধনায় তামিম ইকবালের হাতে তুলে দেওয়া হয় তার ক্যারিয়ারের দীর্ঘ পরিসংখ্যান সম্বলিত একটি স্মারক জার্সি এবং ক্রেস্ট। বিদায়ী সংবর্ধনায় সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি বিন মুর্তজার কথা উল্লেখ করে বক্তব্য দিয়েছেন তামিম।
দেশের ক্রিকেট ভক্তদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তামিম ইকবাল বলেন, ‘কোনো তামিমিয়ান নেই, কোনো সাকিবিয়ান নেই, কোনো মাশরাফিয়ান নেই। শুধু একটা জিনিস আছে, আর সেটা হলো বাংলাদেশ। এই বিষয়গুলো তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেয়, দয়া করে এসব বন্ধ করুন। এটাই আমার শেষ কথা।’ কোনো নির্দিষ্ট ক্রিকেটারের ভক্ত না হয়ে বাংলাদেশকেই সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ব্যাটিংয়ে লাল–সবুজ জার্সিতে অসংখ্য রেকর্ডের মালিক তামিম বলেন, ‘আপনি আমার ভক্ত হতে পারেন, আপনি সাকিবের ভক্ত হতে পারেন, আপনি মাশরাফির ভক্ত হতে পারেন, কিন্তু যখন দল খেলবে, তখন বাংলাদেশের ভক্ত হোন। তরুণ দলকে সমর্থন করুন, তারা ভুল করবে, কিন্তু দয়া করে তাদের পাশে থাকুন। আপনার দলকে সমর্থন করুন, এটা আপনারই দল। দয়া করে সবাই একসঙ্গে থাকুন।’
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিমের। তিন সংস্করণ মিলে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের জার্সিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৮৭ ম্যাচ ও ৪৪৮ ইনিংসে ১৫১৯২ রান করেছেন। সবমিলিয়ে ৯৪ ফিফটি ও ২৫টি সেঞ্চুরি করেছেন তামিম।