গুম বিষয়ক তথ্যচিত্রের শুটিংয়ের জন্য সিলেট গেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার ফ্লাইটে সিলেট যাওয়ার পর তিনি তামাবিল সীমান্ত এলাকায় যান। সেই স্থান পরিদর্শন করেন, তাকে যে পথ দিয়ে গুম করে ভারতে নেওয়া হয়েছিল।
২০১৫ সালের ১০ মে সন্ধ্যায় তাকে এই পথে ভারতের শিলং নেওয়া হয় বলে দাবি করেন সালাউদ্দিন। সরকার আওয়ামী লীগ আমলে গুম–খুন নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করছে। তার শুটিংয়ে অংশ নিতে তিনি তামাবিল সীমান্তে যান। এসব তথ্য জানিয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, দলীয় কোনো কর্মসূচিতে নয়, সালাহউদ্দিন আহমদ আওয়ামী লীগ আমলে গুম হওয়ার ঘটনায় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গুম কমিশনের উদ্যোগে করা তথ্যচিত্রের শুটিংয়ে অংশ নিতে এসেছেন। এ সময় তিনি ২০১৫ সালে তার গুম হওয়ার ঘটনার স্মৃতিচারণা করেন। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, সালাহউদ্দিন আহমদকে চোখ বেঁধে কাদামাটি দিয়ে হাঁটিয়ে নেওয়া হয়েছিল। একপর্যায়ে তাকে সিঁড়ি বেয়ে কোনো উঁচু জায়গায় উঠিয়ে বাড়িতে রাখা হয়েছিল। সেখানে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা ইংরেজিতে ও হিন্দি ভাষায় কথা বলেছিলেন। সেই বিষয়গুলো তিনি বলেছেন।
বিএনপি নেতা আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদ সিলেটের দলীয় নেতা–কর্মী এবং দলের সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন। এর বাইরে দলীয় কোনো কর্মসূচিতে তিনি অংশ নেননি। রাত ৮টার ফ্লাইটে তিনি ঢাকায় ফিরে যাবেন। ২০১৫ সালের ১০ মার্চ গুম হওয়ার ৬৩ দিন পর সালাহউদ্দিন আহমদকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং শহরে পাওয়া যায়। আইনি জটিলতা ও মামলা মোকাবিলার কারণে তিনি প্রায় নয় বছর সেখানে অবস্থান করেন। দেশে ফেরার পথ সুগম হয় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর। ১১ আগস্ট তিনি দেশে ফেরেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুমের ঘটনার তদন্ত করতে হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিশন গঠন করা হয়েছে। দেশে ফেরার ১০ মাস পর ৩ জুন সালাহউদ্দিন আহমদ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়।