তামাক ব্যবহার করেন ৩৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ

নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে তামাক মহামারির কবলে পড়বে দেশ

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৭ অক্টোবর, ২০২১ at ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশে প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ তামাকজনিত রোগে মারা যায়। পঙ্গুত্ব বরণ করেন আরো কয়েক লাখ। বর্তমানে দেশের ৩৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী তামাক ব্যবহার করেন, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। শক্তিশালী আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দেশ দ্রুতই তামাক মহামারির কবলে পড়বে।
‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়। গতকাল শনিবার নগরীর জিইসি মোড়ে একটি রেস্টুরেন্টে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংশোধনীর মাধ্যমে বর্তমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি যুগোপযোগী করা এবং এ বিষয়ে গণমাধ্যমের করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়। ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের (সিটিএফকে) সহায়তায় গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা) এ কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় চট্টগ্রাম বিভাগের আত্মার প্রতিনিধি প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৪ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞার তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রকল্প প্রধান হাসান শাহরিয়ার। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়ার বর্তমান অবস্থা এবং এ বিষয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা সম্পর্কে তুলে ধরেন সিটিএফকের কমিউনিকেশন ম্যানেজার সরকার শামস বিন শরীফ। আলোচক হিসেবে অংশ নেন চট্টগ্রাম আত্মার আহ্বায়ক আলমগীর সবুজ এবং আত্মার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইফুল আলম। কর্মশালায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন বিষয়ে যেসব প্রস্তাব তুলে ধরা হয় সেগুলো হচ্ছে, ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বিলুপ্তসহ সকল পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি বা সিএসআর কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা এবং প্যাকেটবিহীন জর্দা-গুল বিক্রয় নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট এবং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টস (এইচটিপি) সহ সকল ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস আমদানি, উৎপাদন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করা এবং সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার বৃদ্ধিসহ তামাকপণ্য মোড়কজাতকরণে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা।
মূল উপস্থাপনায় বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল- এফসিটিসির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রত্যয় ব্যক্ত করলেও এ বিষয়ে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে অধিকতর শক্তিশালী করা না গেলে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজয়ার ঘরে দুই কন্যা
পরবর্তী নিবন্ধইছানগর খাল দখল ও ভরাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন