তামাকুমণ্ডি লেনে ভিড়, বাড়ছে বেচাকেনা

স্বাস্থ্যবিধি মানতে চলছে মাইকিং, কারো মাস্ক আছে কারো নেই

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৩০ এপ্রিল, ২০২১ at ৭:২১ পূর্বাহ্ণ

করোনাকালীন লকডাউনের মধ্যেও মার্কেটে ভিড় বাড়ছে ক্রেতাদের। গত কয়েকদিন ধরে মার্কেটে ক্রেতা সমাগম কম হলেও ধীরে ধীরে সেটি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। এছাড়া মার্কেট বন্ধ করার সময় সীমা বিকেলে ৫টার পরিবর্তে রাত ৮টা করার সুফল মিলছে বলে জানা গেছে। গতকাল বিকেলে নগরীর তামাকুমণ্ডি লেন ঘুরে দেখা গেছে, পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকে ঈদের কেনাকাটা করতে ছুটে এসেছেন। মার্কেটের সামনে দাঁড়ানো নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের হাতে স্প্রে করে তারপর ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছিলেন। তবে অনেক ক্রেতাকে মাস্ক চিবুকের নিচে নামিয়ে কেনাকাটা করতে দেখা দেছে। একই অবস্থা দেখা গেছে বিক্রেতাদের ক্ষেত্রেও। যদিও মার্কেট কর্তৃপক্ষ কিছুক্ষণ পর পর ক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মাইকিং করছে।
তামাকুমণ্ডি লেনের ব্যবসায়ীরা বলছেন, তামাকুমণ্ডি লেনে ১১০টি মার্কেটের সমন্বয়ে বণিক সমিতি গঠিত হয়েছে। এখানে প্রায় ১৪ হাজার দোকান আছে। এসব দোকানে ব্যবসায়ী আছেন কম করেও হলেও ১০ হাজার। এছাড়া আমদানিকারক আছেন দুই শতাধিক। তামাকুমণ্ডি লেনে পোশাক ছাড়াও কসমেটিক, জুতা সেন্ডেল, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য, মোবাইল ও মোবাইল এক্সসরিজ, জুয়েলারি এবং ক্রোকারিজের দোকান আছে। এখান থেকে একজন ক্রেতা ঈদের এবং গৃহস্থলির আনুষাঙ্গিক বাজার সারতে পারেন। তবে এবার সরকার ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে দোকানপাট খোলার অনুমতি দিলেও গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা মার্কেটে আসতে পারছেন না। তাই মার্কেটে অন্যান্য বছরের মতো ঈদের স্বাভাবিক আমেজটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
জানতে চাইলে তামাকুমণ্ডি লেন বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহমদ কবির দুলাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, মার্কেটে ক্রেতা সমাগম আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। তবে তা প্রত্যাশার চেয়ে কম। মূলত গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণেই ক্রেতার সংখ্যা কম। আমরা ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি। প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে ক্রেতাদের স্প্রে করার পরে দোকানে ঢুকতে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া মুখে মাস্ক না থাকলেও দোকানে ঢুকতে দেয়া হবে না, এই নির্দেশনা আমরা দিয়েছি। অর্থাৎ নো মাস্ক , নো এন্ট্রি। কোনো ব্যবসায়ী যদি আমাদের নির্দেশনা না মানেন তবে আমরা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। কারণ স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে সরকার মার্কেট খুলে দিয়েছে। এখন সরকারের নির্দেশনা মেনে চলা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
তামাকুমণ্ডি লেনে আসা গৃহিনী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, বাচ্চাদের জন্য কাপড় কিনতে এসেছি। অন্যান্য বছর রমজানের আগেই কেনাকাটা সেরে ফেলতাম। তবে এবার লকডাউনের কারণে পারিনি। মার্কেটে পছন্দনীয় অনেক কালেকশন এসেছে। তবে ক্রেতারা দামও বেশি হাঁকছেন।
তামাকুমণ্ডির লেনের বিনিময় টাওয়ারে আসা ক্রেতা মারুফ চৌধুরী বলেন, পাঞ্জাবি কিনতে এসেছিলাম। পছন্দ হলেও বেশি দাম বলায় নিতে পারিনি। ব্যবসায়ীরা মনে হয়, করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য বেশি দাম চাচ্ছেন।
তামাকুমণ্ডি লেন বণিক সমিতির সভাপতি আবু তালেব দৈনিক আজাদীকে বলেন, এ বছর বেচাবিক্রির অবস্থা মন্দা। অন্যান্য বছরের তুলনায় ক্রেতার পরিমাণ দুই তৃতীয়াংশ কমে গেছে। পরিবহন বন্ধ থাকায় দূরের অনেক খুচরা ব্যবসায়ীও পণ্য কিনতে আসতে পারছেন না। সব মিলিয়ে এ বছর আমরা খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে আছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএবারের হজের বিষয়ে আর্থিক লেনদেন না করার জন্য অনুরোধ
পরবর্তী নিবন্ধপ্রথমে গ্রামে পরে শহরে স্কুল খোলার ভাবনা