আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ গতকাল বৃহস্পতিবার তফসিলের সম্ভাব্য সময় সাংবাদিকদের জানান।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এদিন নবম কমিশন সভা হয়। বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আইন সংস্কার নিয়ে আলোচনা চলে। পরে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে ভোট করতে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো চিঠি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পৌঁছেছে। তবে কমিশন সভায় সেই চিঠি নিয়ে আলোচনা হয়নি। তবে আমরা অতি শিগগির আলোচনা করব। আর মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার আপনাদেরকে যেটা বলেছেন, আমাদের পক্ষ থেকে ঘোষণাটা আসবে দুই মাস আগে। আপনারা ধরেই নিতে পারেন, এই শিডিউল ঘোষণার কাজটা আমাদের ডিসেম্বর মাসের প্রথমার্ধে (করব)। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, যেদিন নির্বাচন হবে, আনুমানিক তার ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে। রোজার আগে নির্বাচন, রোজা যদি হয় ১৮ ফেব্রুয়ারি, তার আগে দুই চার দিন সময় দেবেন ফর নিউ গভার্নমেন্ট টু টেক ওভার, শপথ গ্রহণ ইত্যাদি। তার আগে নির্বাচন হবে। নির্বাচনের যে ডেটটা হবে, টেন্টেটিভলি (মোটামুটিভাবে) তার থেকে ৬০ দিন আগে আপনারা হিসাব করবেন।
প্রবাসীদের ব্যালটে থাকবে কেবল প্রতীক : নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, প্রবাসীরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবেন। তাদের ব্যালট পেপারে শুধু প্রতীক থাকবে। প্রার্থীর নাম থাকবে না। তিনি বলেন, প্রবাসীদের কাছে সিম্বল ব্যালট (প্রতীক সম্বলিত) যাবে, যাতে সময় কম লাগে। প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পরে সিম্বল ব্যালটে ভোট দেবেন। ইসিতে এসে পোস্ট অফিস ব্যালট নিয়ে যাবে। এক্ষেত্রে নিবন্ধন করে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর তারা অনলাইনে প্রার্থীর তালিকা দেখতে পারবেন। সেই অনুযায়ী তারা পছন্দের প্রার্থী দেখে ব্যালটে থাকা সেই প্রার্থীর প্রতীকে ভোট দেবেন।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রবাসীদের ভোট নিশ্চিত করতে চাই। মাধ্যমটা হবে পোস্টাল ব্যালট। এবার তিনভাবে পোস্টাল ব্যালটে ভোট হবে। যারা প্রবাসে থাকেন, কারাগারে থাকেন ও ভোটের দায়িত্বে থাকেন; তাদের জন্য এই ব্যবস্থা থাকবে। এজন্য আগেই নিবন্ধন করতে হবে। পোস্টাল ব্যালটের ক্ষেত্রে সেপ্টেম্বর থেকে প্রচার ও ভোটার–শিক্ষণের কাজ চলবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শেষ মুহূর্তে প্রার্থী পরিবর্তন হলে আদালতের আদেশে, সেখানে পোস্টাল ব্যালট হবে না। তবে আইনি কার্যক্রম যেন দ্রুত হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। আবুল ফজল জানান, এটা ব্যয়সাপেক্ষ পদ্ধতি। আনা–নেওয়া করতে ব্যালট প্রতি ৫০০ টাকা, এরপর ছাপানোর খরচও আছে। আবার নিবন্ধন কার্যক্রমের জন্য ৪৮ টাকার প্রকল্প নেওয়া হবে। প্রতি এক লাখ ভোটারের জন্য সবমিলিয়ে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা লাগবে।
তিনি বলেন, ভোটার তালিকা আইনে সামান্য সংশোধন করেছিলাম। এজন্য বছরের মাঝামাঝিতে ভোটার করে নিতে পারব। এজন্য ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যারা ১৮ বছর পূর্ণ করবে তাদের তালিকায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত হবে। এতে ১৮ থেকে ২০ লাখ তরুণ ভোটার যোগ হতে পারে।