তত্ত্বাবধায়ক সরকার আগামী নির্বাচনগুলোকে সুসংহত ও গ্রহণযোগ্য করবে : খসরু

| শুক্রবার , ২১ নভেম্বর, ২০২৫ at ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে দেশে আগামী সংসদ নির্বাচনগুলো সুসংহত এবং গ্রহণযোগ্য হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের মানুষকে যে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে, যে জীবনগুলো দিতে হয়েছে, যে নির্বাচনগুলোকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, যার ফলে যে অপশাসন, নিপীড়ন ও নির্যাতনের রাজত্ব সৃষ্টি হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে আমরা আশা করি সেটা আগামী নির্বাচনগুলোকে সুসংহত করবে এবং গ্রহণযোগ্য করবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ‘কমল মেডিএইড’ আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন আমীর খসরু। খবর বিডিনিউজের।

আমীর খসরু বলেন, এমন একটি সময়ে আমরা নির্বাচনের সম্মুখীন, এই নির্বাচনকে সামনে রেখে আশা করছি যে আগামীর দিনগুলোতে নির্বাচনগুলো অন্তত সুষ্ঠু হবে, গ্রহণযোগ্য হবে, যদিও এই নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পর্কিত নয়। নির্বাচিত সরকারের অনুপস্থিতিতে দেশ কতদূর যেতে পারে, বিগত দিনে দেখেছি, এখনো একটি অনির্বাচিত সরকার আছে, যদিও আমি বিগত স্বৈরাচারের সাথে তুলনা করছি না।

নির্বাচিত এবং অনির্বাচিত সরকারের পার্থক্য টেনে তিনি বলেন, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচিত সরকারের পক্ষে যে কাজগুলো করা সম্ভব হয় কোনো অনির্বাচিত সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। সুতরাং বাংলাদেশের মানুষ একটি নির্বাচিত সরকারের অপেক্ষায় আছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব এটা কেয়ারটেকার সরকারের মাধ্যমে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমি অবাক হয়েছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ফার্মেসি নেই। এটাই বুঝা যায় স্বাস্থ্য সম্পর্কে আমরা কতটা সচেতন। বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদকের সমস্যা আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কৃতিত্ব দিতে হবে যে এখানে মাদকের সমস্যা নাই। সরকারে আসতে পারলে দেশের মানুষের জন্য বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা বিএনপি নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আমীর খসরু বলেন, স্বাস্থ্য সেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। আমাদের প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য সেবা শুরু করতে হবে। আমাদের প্রথম উদ্যোগ হবে প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা। পরের ধাপ হবে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা। আমরা বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে চাই প্রতিটি নাগরিকের জন্য। প্রত্যেকটি পরিবারকে মাসে পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা খরচ করতে হয় এই স্বাস্থ্য খাতে। কিন্তু যদি আমরা বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে পারি তাহলে এই টাকা থেকে যাচ্ছে। এই টাকা অন্য খাতে ব্যয় করতে পারবে।

সেখানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন বলেন, গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ছিল সবাই সবার পাশে দাঁড়াবে। আজকে কমল মেডি এইড তারই বহিঃপ্রকাশ। বাংলাদেশে ইতিহাস ঐতিহ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অপরিসীম। তাই এখান থেকে যখন কোন উদ্যোগ নেওয়া হয় তা পরবর্তীতে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি বলেন, বিএনপি এমন একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে যা চায় জনগণের বাংলাদেশ হবে। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে চাই। তাই উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নত করতে হবে। বাংলাদেলের প্রতিটি মানুষের জন্য সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, হলে থাকা অবস্থায় শিক্ষার্থীদের অসুস্থতা স্বাস্থ্যের উপর যে একটা প্রভাব ফেলে যা হলে থাকাকালীন বুঝা যায় না। পরবর্তীতে আমরা এর ফল ভোগ করি। তিনি বলেন, এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়ায় কোনো ফার্মেসি নাই। এখানে এলিট ক্লাসের জন্য একটা ফার্মেসি সেখানেও আবার সবাই যেতে পারে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হলে এখানে একটা মেডিকেল সেন্টার রয়েছে, সেখানে যে কোন অসুখের জন্য প্যারাসিটামল দেওয়া হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প আয়োজন করেন ডাকসুতে ছাত্রদল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বিজীত জিএস প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামীম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনপির প্রার্থী ঘোষণায় বিলম্ব নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা
পরবর্তী নিবন্ধতিন দিনের সফরে কাল ঢাকায় আসছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী