ঢাকার কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মিজানুর রহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীর করা চাঁদাবাজির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আজ মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মো. নোমান এই আদেশ দেন।
ওসির সঙ্গে কোতোয়ালি থানার এসআই আনিসুল ইসলাম, এএসআই খায়রুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও সোর্স দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে গত ১৭ নভেম্বরে আদালতে এই আবেদন করেছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. রহিম। বিডিনিউজ
তার আইনজীবী জাকির হোসেন হাওলাদার বলেন, “আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে ৩ ডিসেম্বর আদেশের জন্য রাখেন। এরপর তারিখ পিছিয়ে ২০ ডিসেম্বর ধার্য করা হয়। এরপর আদালত আজ মামলাটি ডিবি পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন। এএসপি পদমর্যাদার নিচে নয় এমন একজন কর্মকর্তাকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।”
ঐ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর লিখিত অভিযোগে বলা হয়, “গত ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় কাজ শেষে চরকালীগঞ্জ জেলা পরিষদ মার্কেট থেকে বাসায় ফিরছিলেন রহিম। রাত ৮টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার চুনকুটিয়া ব্রিজের উপর পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা তিনজন তার গতিরোধ করেন। তারা নিজেদের ঢাকা জেলার ডিবি পুলিশ পরিচয় দেন। রহিমের নামে ডিবিতে মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে বলেও জানান।
পরে তারা রহিমকে একটি দোকানে নিয়ে তল্লাশি করেন। তবে তার কাছ থেকে কিছু উদ্ধার করতে পারেননি। দোকানে উপস্থিত লোকজন রহিমকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। এরপর তারা রহিমকে দোকান থেকে বের করে বাবুবাজার ব্রিজের কাছে নিয়ে যান। সেখানে এসআই আনিসুল ইসলাম, এএসআই খায়রুল ইসলাম ও সোর্স দেলোয়ার উপস্থিত ছিলেন। এই তিনজন নিজেদের কাছ থেকে ৬৫০ পিস ইয়াবা বের করে বলেন, এগুলো রহিমের কাছ থেকে পাওয়া গেছে।
এই সময় রহিমকে আনিসুল ইসলাম বলেন, যদি ফাঁসতে না চাস তাহলে দুই লাখ টাকা জোগাড় কর। না হলে মাদক ব্যবসায়ী সাজিয়ে মামলায় ফাঁসিয়ে দেব। তখন মামলা থেকে বাঁচার জন্য রহিম নিজের কাছে থাকা এক ভরি স্বর্ণের চেইন, নগদ ১৩ হাজার টাকা আনিসুল ইসলামের হাতে তুলে দেন। এরপরও দুই লাখ টাকা দিতে না পারায় তারা রহিমকে রাত সোয়া ৯টার দিকে থানায় নিয়ে যান। পরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে রহিম আরও ৫০ হাজার টাকা দেন। রাত ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে রহিমকে ডেকে নেন ওসি মিজানুর রহমান। রহিমকে তিনি বলেন, তোকে বাঁচিয়ে দিলাম। ছোট মামলা দিলাম, দুই একদিনের মধ্যে বের হয়ে আসতে পারবি।”
পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, “তাদের দাবি অনুযায়ী পুরো টাকা পেয়েও রহিমের বিরুদ্ধে ১০টি ইয়াবার মামলা দিয়ে তাকে আদালতে পাঠান ওসি মিজানুর রহমান। ১৭ দিন জেলে থেকে ৩০ অক্টোবর জামিনে মুক্তি পান রহিম।”
এরপর গত ১৭ নভেম্বর আদালতে এই অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
এর আগে গত ১০ অগাস্ট ‘ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে’ অর্থ আদায়ের অভিযোগে ওসি মিজানুর রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন কাপড় ব্যবসায়ী মো. সোহেল। পরে মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন তিনি।