বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, বাণিজ্যে বৈচিত্র আনা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আমাদের দেশ যতটা সম্ভব অন্য দেশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছে। আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে একাধিক ব্যবসায়িক সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেছি এবং আশা করি উদ্যোক্তারা তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা চালাবেন। গতকাল নগরীর আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের হল রুমে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত ‘মিটিং উইথ জাম কামাল খান ও শেখ বশিরউদ্দীন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান বলেন, ভিসা প্রক্রিয়া সহজ হওয়ার পর আশা করছি চলতি বছরের শেষ নাগাদ ঢাকা–করাচি সরাসরি ফ্লাইট চালু হতে পারে। সরাসরি বিমান চলাচল কেবল মানুষের চলাচলকেই নয়, পণ্য আমদানি ও রপ্তানিকেও সহজতর করবে। এ বিষয়ে উভয় দেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে জাহাজ চলাচল আরও বাড়ানো হবে বলে তিনি জানান।
পাকিস্তানি ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার করতে অত্যন্ত আগ্রহী উল্লেখ করে দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, পরিবর্তিত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দৃশ্যপট সুযোগের নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। দ্বিপাক্ষিক ব্যবসায়িক সম্পৃক্ততার সম্ভাবনা অন্বেষণের জন্য ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করেছে। আগামীকাল ২৪ আগস্ট দুই দেশের মধ্যে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠার জন্য একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হবে, যার লক্ষ্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করা।
স্বাগত বক্তব্যে চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, দু’দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য সম্পর্ক থাকলেও পাকিস্তান থেকে ৭০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য আমদানির বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি মাত্র ৫৮ মিলিয়ন ডলার। তবে সাফটা এবং ডি–৮ পিটিএ কার্যকর করার পাশাপাশি উভয় দেশের মধ্যে ননট্যারিফ বাধা হ্রাস করা, বিটুবি সংযোগ উৎসাহিত করার মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ আকর্ষণ সম্ভব। তিনি প্রচলিত পোশাক শিল্পের বাইরে ফার্মাসিউটিক্যাল ও হেলথকেয়ার প্রোডাক্ট, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, আইসিটি ও ডিজিটাল সেবা, লাইট ইঞ্জিনিয়াারিং ও শিপবিল্ডিং, অ্যাগ্রো ও ফুড প্রসেসিং খাতে বিনিয়োগ ও সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে বলে মত দেন। ।
চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার পাশার সভাপতিত্বে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ডাব্লিওউটিও) ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী, বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন, পাকিস্তান হাইকমিশনের ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট অ্যাটাচে জাইন আজিজ, সিসিসিআইর সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এমএ সালাম, সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এরশাদ উল্লাহ, বাংলাদেশ স্টিল রি রোলিং মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আলী হোসাইন আকবর আলী, পান রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. একরামুল করিম চৌধুরী, চেম্বারের সাবেক পরিচালক আমজাদ হোসেন চৌধুরী, বিজিএমইএ পরিচালক মো. এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, বাফার সিনিয়র সহ–সভাপতি আমিরুল ইসলাম চৌধুরী (মিজান) ও প্রান্তিক গ্রুপের এমডি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম সরওয়ার প্রমুখ বক্তব্য দেন। উপস্থিত ছিলেন চিটাগাং চেম্বারের সাবেক পরিচালক কামাল মোস্তফা চৌধুরী, প্রাইভেট হসপিটালস অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. একেএম ফজলুল হক, খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আবদুস সালাম, বিকডার পরিচালক মো. শাহ আলম, টিকে গ্রুপের পরিচালক জাফর আলম, লুব–রেফের এমডি মোহাম্মদ ইউসুফ, চট্টগ্রাম বিজনেস ফোরামের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি কামরুল হুদা, উইম্যান চেম্বারের সাবেক সহ–সভাপতি আইভি হাসান, মেরিডিয়ান গ্রুপের পরিচালক আকিব কামাল প্রমুখ।