ঢাকার ১৭টি থানা এলাকার করোনাভাইরাস শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের উপরে। এর মধ্যে রূপনগর ও আদাবরে শনাক্ত রোগী সবচেয়ে বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (আইএসএস) করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার তথ্য বিশ্লেষণ করে গতকাল শনিবার তা জানিয়েছে আইইডিসিআর।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় সংক্রমণের হার উত্তরের চেয়ে বেশি। গত ২৭ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত দুই সিটি করপোরেশন এলাকার ৫১ হাজার ১০৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তা বিশ্লেষণ করেছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এই সময়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৪ হাজার ৩৩২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে ৫ হাজার ১০৩ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। শনাক্তের হার ৩৬ শতাংশ। উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার ৩৬ হাজার ৭৭১টি নমুনা পরীক্ষা করে ১০ হাজার ৮৪৩ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ে। শনাক্তের হার ২৯ শতাংশ। খবর বিডিনিউজের।
আইইডিসিআর দেখেছে, উত্তর সিটি করপোরেশনের রূপনগর থানা এলাকায় শনাক্তের হার ৪৬ শতাংশ এবং আদাবর থানা এলাকায় শনাক্তের হার ৪৪ শতাংশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১০ এপ্রিল যে তথ্য দিয়েছে, তাতে সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০
দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
সারা দেশের শনাক্তের হারের সঙ্গে তুলনা করলে ঢাকায় শনাক্তের হার অনেক বেশি। ঢাকার ১৭টি থানায় শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের উপরে। ২৩টি থানা এলাকায় ২০ শতাংশের উপরে। ৭টি থানা এলাকায় সংক্রমণের হার ১১ শতাংশের বেশি। রূপনগর ও আদাবর ছাড়া যেখানে সংক্রমণের হার ৩০ শতাংশের বেশি, সেই থানাগুলো হলো শাহ আলী, রামপুরা, তুরাগ, মিরপুর, কলাবাগান, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, মুগদা, গেণ্ডারিয়া, ধানমণ্ডি, হাজারীবাগ, নিউ মার্কেট, চকবাজার, সবুজবাগ, মতিঝিল, দারুসসালাম ও খিলগাঁও।
সংক্রমণের হার ২১ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে আছে এমন থানাগুলো হচ্ছে শাহবাগ, বংশাল, লালবাগ, শাহজাহানপুর, রমনা, কামরাঙ্গীরচর, শ্যামপুর, বাড্ডা, বনানী, উত্তরখান, শেরে বাংলানগর, সূত্রাপুর, যাত্রাবাড়ী, পল্লবী, কাফরুল, ডেমরা, ওয়ারী, ভাটারা, দক্ষিণখান, খিলক্ষেত, কদমতলী, উত্তরা পূর্ব ও পল্টন থানা এলাকা। শনাক্তের হার ১১ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে পাওয়া গেছে তেজগাঁও, উত্তরা পশ্চিম, ভাষানটেক, গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এবং বিমানবন্দর থানা এলাকা।
ঢাকার এ পরিস্থিতি দেখে উদ্বেগ জানিয়েছেন আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি বলেন, ঢাকায় সারা বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ। এটা আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি। এটার একটা দালিলিক প্রমাণ হলো এসব তথ্য।
কী কারণে ঢাকায় বেশি তার ব্যাখ্যায় এই বিশেষজ্ঞ বলেন, এখানে লোকসংখ্যা অনেক বেশি। জনসমাবেশ, বদ্ধ ঘরে অনুষ্ঠান সবচেয়ে বেশি হয়েছে। এখানে ম্যান টু ম্যান ট্রান্সমিশনের ঝুঁকিও সবচেয়ে বেশি।
গত বছরের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর বছরের শেষে কমে এলেও সমপ্রতি সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় রোগী হু হু করে বাড়ছে। গত কয়েকদিন ধরেই দিনে ৬ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে গত বুধবার রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। তবে গতকাল শনাক্ত রোগী ৬ হাজারের নিচে নেমেছে।











