কক্সবাজারের চকরিয়ার চিংড়ি জোনের রামপুরে মোহাম্মদ হোসেন হত্যাকাণ্ডটি পূর্ব পরিকল্পিত। সেই পরিকল্পনার মূল হোতা হচ্ছে শহিদুল ইসলাম ওরফে লিটন। মূল হোতা লিটনসহ এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রুজুকৃত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গত বুধবার রাতে র্যাব–৩–এর একটি দল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। রামপুর সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির অধিভুক্ত বিশাল চিংড়ি প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণ রাখাসহ নানা কারণে মোহাম্মদ হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে জানিয়েছে র্যাব।
গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন– আবু জাফর (৫০), মো. সোহেল (৩৭), আজগর আলী (৪৫), আবুল হোসেন ওরফে পাখি (৩৫), নাজমুল হোসাইন ওরফে রকি (২৭), আবদুর রহিম (৪৮), জয়নাল আবেদীন (৫৫), মো. শাহিন (২৩), মুহাম্মদ শাহাব উদ্দিন (৪৪), প্রদীপ কুমার শীল (৪৮), মো. রিদুয়ান (৩১), আবদুল হক (৫৫), মো. কাইছার (৩৫)। তাঁরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে র্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, চিংড়ি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হোসেন হত্যায় তাঁর ছেলে ১২ জানুয়ারি বাদী হয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। খন্দকার আল মঈন বলেন, মোহাম্মদ হোসেন কক্সবাজারের রামপুর সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির সদস্য। তিনি ৭ বছর ধরে চিংড়িঘের এলাকার ৪৮ একর জমিতে খামার ঘর তৈরি করে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। পাশাপাশি চিংড়িঘের পাহারারও দায়িত্বে ছিলেন। গ্রেপ্তার আবু জাফর রামপুর সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির সভাপতি এবং শহিদুল ইসলাম (৪৫) সমিতির সাধারণ সম্পাদক। সমিতিটিতে প্রায় ৬০০–৭০০ সদস্য রয়েছেন। সমিতির মালিকানাধীন চিংড়িঘেরের সাহারবিলের রামপুর মৌজায় ৫ হাজার ১১২ একরের একটি চিংড়িঘের রয়েছে। এর মধ্যে কিছু চিংড়িঘের সমিতির নিয়ন্ত্রণে ছিল না।
র্যাব জানায়– শহিদুলের নির্দেশে গ্রেপ্তার সোহেল, আজগর আলী, আবুল হোসেন, নাজমুল ও আবদুর রহিম মোহাম্মদ হোসেনকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেন। শহিদুল স্থানীয় কলেজ থেকে স্নাতক পাস করে জ্বালানি তেলের ব্যবসা করেন। পরে তিনি রামপুর সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। চিংড়িঘেরে নিজের প্রভাব বিস্তারের জন্য শহিদুল এলাকায় ৩০–৩৫ জনের একটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দল গঠন করেন। এলাকায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দলের মাধ্যমে অবৈধভাবে জমি দখল, হুমকি, মারামারি, চাঁদাবাজি, প্রতারণা, অপহরণসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় দস্যুতা, মারামারি, চাঁদাবাজি, প্রতারণা, অপহরণসহ ৭টি মামলা রয়েছে।