‘মাহবুবুল হকের জীবন কর্মনিপুণতায় ভাস্বর। তাঁর কাজের ক্ষেত্র এবং কর্মসাধনা বিপুল, বর্ণিল। জীবন ও সংস্কৃতির যে বহুমাত্রিকতা তাকে তিনি তাঁর বোধিতে ধারণ করেছেন এবং কর্মে রূপায়ণে সচেষ্ট ছিলেন। আমাদের সাহিত্যের মননশীল ধারাটি তাঁর হাতে পুঁজি লাভ করেছে। ভাষা, ব্যাকরণচর্চা, অভিধান প্রণয়ন, লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি গবেষণা, অনুবাদ গ্রন্থ ও সাময়িকী সম্ভাবনার মতো দুরূহ ও শ্রমসাধ্য কাজে নিজেকে নিবেদন করেছেন দশকের পর দশক; এজন্য তিনি উভয় বাংলার সারস্বত সমাজে সমাদৃতও হয়েছেন।’
গতকাল সন্ধ্যায় নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত ড. মাহবুবুল হক স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। তাঁরা বলেন, মাহবুবুল হক ১৯৭১ সালের বাঙালির চির অহংকার মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে অসামান্য অবদান রেখেছেন। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও বাংলাদেশে ছাত্র ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত গেরিলা যোদ্ধাদের জন্য ভারতের ত্রিপুরায় স্থাপিত দুটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প পরিচালনা ও রাজনৈতিক সংগঠনের ভূমিকা পালন করেছেন। মাহবুবুল হক কৃতী ছাত্র, শিক্ষাবিদ হিসেবে তিনি স্বাক্ষর রেখেছেন শিক্ষকতায়। তিনি ছাত্রছাত্রীদের খুবই প্রিয় ছিলেন। নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যসূচি ও শিক্ষাকার্যক্রমে যুক্ত থেকে তিনি ব্যতিক্রমী অনুশীলন শৈলী ও পাঠ সহায়ক কর্মসূচি সম্পন্ন করেছেন। কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি লেখক, গবেষক, প্রকাশক মফিদুল হক। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ড. মাহবুবুল হক স্মরণসভা পরিষদের সদস্য সচিব কামরুল হাসান বাদল। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন অধ্যাপক শীলা দাশগুপ্ত। বক্তব্য প্রদান করেন বাকবিশিসের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি উত্তম চৌধুরী, অধ্যাপক আনোয়ারা আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম, অধ্যাপক ঈমাম আলী, অধ্যাপক শিপ্রা দাশগুপ্ত। পরিবারের পক্ষে বক্তব্য দেন ড. মাহবুবুল হকের পুত্র উপল মাহমুদ ও কন্যা উপমা মাহমুদ। স্মরণসভা উপলক্ষে ‘বহুমাত্রিক মাহবুবুল’ নামে একটি স্মরণপত্র প্রকাশিত হয়েছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।