দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার আইন অনুযায়ী কাজ করে ব্যক্তি পরিচয় দেখার কোনো সুযোগ নেই। সুতরাং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে, এমন অভিযোগ সঠিক নয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদক কার্যালয়ের সামনে অর্থ আত্মসাৎ মামলায় ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানি করা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটির সচিব মো. মাহবুব হোসেন এসব কথা বলেন। দুদক সচিব বলেন, অভিযোগের প্রাথমিক সততা পাওয়ায় মামলা হয়েছে। এখানে হয়রানির অভিযোগ সঠিক নয়। মামলার আসামিকে কখন কিভাবে গ্রেপ্তার হয় সেটির আইনি ব্যাখ্যা আছে, তদন্তকারী কর্মকর্তা সেটি জানেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। খবর বাংলানিউজের।
সচিব বলেন, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির শ্রমিক–কর্মচারীদের মধ্যে ২০১০ থেকে ২০২১–২২ অর্থ বছরের নিট মুনাফার ৫ শতাংশ লভ্যাংশ বণ্টনের অনিয়মের বিষয়ে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক–কর্মচারী ইউনিয়ন তাদের নিজস্ব প্যাডে একটি অভিযোগ দাখিল করে। এ অনিয়ম সংক্রান্তে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় গেছে মর্মে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনসহ কোম্পানির শ্রমিক–কর্মচারীদের অভিযোগ দুদকের তফসিলভুক্ত হওয়ায় তা স্মারক ২০২২ সালের ১৪ জুলাই মূল কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর থেকে চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবরে প্রেরণ করেন। এখানে উল্লেখ্য যে, ড. মো. ইউনূসের বিরুদ্ধে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মাধ্যমে গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির শ্রমিক–কর্মচারীদের অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বিধায় দুদকের হয়রানির অভিযোগ সঠিক নয়।
তিনি বলেন, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগগুলো অনুসন্ধান করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়। তারা অনুসন্ধান শেষে অভিযোগটির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা করার সুপারিশ করে একটি অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদন কমিশনে উপস্থাপিত হলে মামলা করার অনুমোদন দেওয়া হয়। তারই প্রেক্ষিতে কমিশনের পক্ষে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের উপ–পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় মামলাটি করেন।
তিনি আরও বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বোর্ডের সদস্যরা অসৎ উদ্দেশে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে ভুয়া সেটেলমেন্ট এগ্রিমেন্টকে খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে জাল–জালিয়াতির আশ্রয়ে গ্রামীণ টেলিকম থেকে ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাৎপূর্বক অপরাধলব্ধ অর্থ স্থানান্তর/রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপনপূর্বক বা পাচারের ছদ্মাবরণে আত্মসাৎ করায় ১৩ জন আসামির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত চলমান রয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতি দুইদিন মিলিয়ে ৭ জনের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। বাকিদেরও বক্তব্য রেকর্ড করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।