ড. আনিসুজ্জামান : শিক্ষাবিদ ও জাতীয় অধ্যাপক

| বুধবার , ১৫ মে, ২০২৪ at ৭:২৪ পূর্বাহ্ণ

. আনিসুজ্জামান (১৯৩৭২০২০)। শিক্ষাবিদ, লেখক ও জাতীয় অধ্যাপক। আনিসুজ্জামান ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম এ টি এম মোয়াজ্জেম। মা সৈয়দা খাতুন। আনিসুজ্জামান কলকাতার পার্ক সার্কাস হাইস্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। এখানে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর বাংলাদেশে চলে আসেন ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে তিনি বাংলা একাডেমির গবেষণা বৃত্তি লাভ করেন। একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি শুরু করেন। ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উনিশ শতকের বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাস: ইয়ং বেঙ্গল ও সমকাল বিষয়ে পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষকতার মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ মার্চ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করেন এবং পরবর্তীকালে ভারত গমন করে শরণার্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। যুদ্ধকালীন গঠিত অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭৪৭৫ খ্রিষ্টাব্দে কমনওয়েলথ অ্যাকাডেমি স্টাফ ফেলো হিসেবে তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে গবেষণা করেন। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রকল্পে অংশ নেন। ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করার পর সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক হিসেবে আবার যুক্ত হন। এছাড়াও তিনি নজরুল ইনস্টিটিউট ও বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ভাষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে কুদরাতখুদা জাতীয় শিক্ষা কমিশনের সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে গবেষণামূলক বহু গ্রন্থ প্রণেতা। তিনি ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদক, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভসহ দেশে বিদেশে অসংখ্য পুরস্কারে সম্মানিত হন। গতকাল ছিলো এ মহান শিক্ষাবিদের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ মে তিনি মৃত্যুবরণ করেছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসামাজিক অপরাধ দমনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সক্রিয় থাকতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধএই দিনে