ডোরিস লেসিং – ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক। ছোটগল্প, নাটক, কবিতা, প্রবন্ধ, স্মৃতিচারণা এবং সমালোচনায়ও ছিলেন সিদ্ধহস্ত। ইংল্যান্ড ও পশ্চিমাবিশ্বে বাম মতাদর্শ, বিশেষ করে মার্কসবাদী কথাকার ও নারীবাদী লেখক হিসেবে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছেন লেসিং।
লেসিংয়ের জন্ম ১৯১৯ সালের ২২ অক্টোবর তদানীন্তন পারস্যে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর তাঁর বাবা মা সেখানে চলে যান। ১৯২৫ সালে এই পরিবারটি চলে আসেন রোডেশিয়ায় [বর্তমান জিম্বাবুয়ে]। আফ্রিকার একটি কনভেন্ট স্কুলে পড়তেন লেসিং। এখানকার ভূপ্রকৃতি ছিল তাঁর ভীষণ প্রিয়। মাত্র ১৫ বছর বয়সে সেবিকা হিসেবে লেসিং তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৪৭ সালে স্থায়ী হন লন্ডনে। এরপর থেকে লেখালেখিকেই বেছে নেন পেশা হিসেবে। ২০০৭ সালে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে বিশ্বজুড়ে খ্যাতমান হয়ে ওঠেন লেসিং। লেসিংয়ের উল্লেখযোগ্য উপন্যাস ‘দ্য গ্রাস ইজ সিংগিং’, ‘মার্থা কোয়েস্ট’, ‘দ্য গোল্ডেন নোটবুক’, ‘শিকাস্তা’, ‘দ্য ম্যারেজ বিটুইন জোনস থ্রি’, ‘দ্য ডায়েরি অব আ গুড নেইবার’, ‘দ্য গুড টেররিস্ট’, ‘বেন, ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ ইত্যাদি। লেসিংয়ের রচনার প্রধান বৈশিষ্ট্য বাস্তববাদ, নীরিক্ষা প্রবণতা, কল্পবিজ্ঞান, লোকগল্প প্রভৃতি বহুমাত্রিকতা।
মানবিক মূল্যবোধ ও সচেতনতাকে উন্নত করাই ছিল লেসিংয়ের রচনার লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে ব্যক্তিজীবনে অনুভূত বাস্তবতার মধ্য দিয়ে মানবিক অভিজ্ঞানকে উপন্যাসের বিষয় করে তুলেছেন লেসিং। রাজনীতির সাথেও তাঁর সম্পৃক্ততা ছিল। কৈশোরে আফ্রিকায় বসবাসকালে মার্কসবাদী গোষ্ঠীর সাথে তাঁর পরিচয় ঘটে। ইংল্যান্ডে এসে যুক্ত হন কমিউনিস্ট পার্টির সাথে। ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর ৯৪ বছর বয়সে প্রয়াত হন মানবতাবাদী শিল্পী ডোরিস লেসিং।