ডেঙ্গু আক্রান্তের দিক থেকে নগরীর সাতটি এলাকাকে ‘লাল বা অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন। এছাড়া আরো ১৬ এলাকাকে হলুদ, নীল ও সবুজ জোনে ভাগ করা হয়। গত সেপ্টেম্বর মাসে আক্রান্ত হওয়া ৫১৫ রোগীর তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল জরিপটি প্রকাশ করা হয়। তালিকাতে নগরীর ২৩টি এলাকাকে লাল, হলুদ, নীল ও সবুজ জোনে ভাগ করা হয়। লাল জোন হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলো হলো–কোতোয়ালী, বাকলিয়া, বায়েজিদ, বন্দর, পাহাড়তলী, খুলশী ও চকবাজার। হলুদ জোনের এলাকাগুলো হলো–পাঁচলাইশ, হালিশহর, পতেঙ্গা, চান্দগাঁও, ডবলমুরিং। নীল জোনের এলাকাগুলো হলো– লালখানবাজার, আগ্রাবাদ, মুরাদপুর, আকবরশাহ, কাট্টলী, নাসিরাবাদ ও দামপাড়া। এছাড়া সবুজ জোনের এলাকাগুলো হলো–অক্সিজেন, সিটি গেইট, চৌমুহনী ও সদরঘাট।
প্রকাশিত তালিকায় গেছে, গত ১ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৫১৫ জন ডেঙ্গু রোগীর সর্বোচ্চ ১০৬ জন আক্রান্ত হয়েছে কোতোয়ালী থানা এলাকায়। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০৩ জন বাকলিয়ায়, বায়েজিদ এলাকায় ৭৬ জন, বন্দরে ৩৩ জন, পাহাড়তলীতে ৩২ জন, খুলশীতে ২৩ জন এবং বন্দর এলাকায় ২০ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে সেপ্টেম্বরে। অপরদিকে ‘হলুদ’ জোন তথা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে আরও পাঁচটি এলাকায়। এর মধ্যে পাঁচলাইশে আক্রান্ত হয় ১৯ জন, হালিশহরে ১৮ জন, পতেঙ্গায় ১৫ জন, চান্দগাঁওয়ে ১১ জন এবং ডবলমুরিং আক্রান্ত হয় ১০ জন।
এদিকে গতকাল নতুন করে চট্টগ্রামে ২১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৮৬৭ জন। এরমধ্যে নগরে ১ হাজার ১৫৩ জন এবং উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭১৪ জন। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। চলতি অক্টোবরে গতকাল পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৩৬২ জন। তবে কারো মৃত্যু হয়নি।
গতকাল চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ২১ জন ডেঙ্গু্ আক্রান্তদের মধ্যে বর্তমানে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ৫ জন, এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে ৫ জন এবং নগরীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরো ১০ জন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চট্টগ্রামে বর্তমানে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে বিভিন্ন জায়গায় স্বচ্ছ পানি জমছে। বিশেষ করে ফুলের টব ও ডাবের খোসা, গাড়ির টায়ারসহ বিভিন্ন পরিত্যক্ত বস্তুতে পানি জমার কারণে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশা প্রজননে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীও বাড়ছে। তাই সবাইকে বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখাসহ কোথাও যাতে তিনদিনের বেশি পানি না জমে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। এছাড়া রাতে ছাড়াও দিনেরও বেলায়ও মশারি টানাতে হবে।
উল্লেখ্য, গত বছর নগর ও বিভিন্ন উপজেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সরকারি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে মোট ভর্তি হয়েছিল ১৪ হাজার ৮৭ জন। এর মধ্যে মারা যায় ১০৭ জন। এছাড়া ২০২২ সালে মোট আক্রান্ত ৫ হাজার ৪৪৫ জনের মধ্যে মারা যায় ৪১ জন, ২০২১ সালে আক্রান্ত হয় ২৭১ জন এবং মারা যায় ৫ রোগী।