নিজের ঘোষিত দল থেকে বিএনপির সাবেক মহাসচিব কে এম ওবায়েদুর রহমানের স্ত্রী শাহেদা ওবায়েদকে বাদ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন দলটির একজন নেতা।
তবে শাহেদা ওবায়েদ বলছেন, যে দল থেকে তাকে বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তার সঙ্গে তার আর সম্পর্ক নেই। তিনি নতুন দল করেছেন। সেই দলের নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদনও করেছেন।
গতকাল শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে শাহেদাকে বাদ দিয়ে ডেমোক্রেটিক রিফর্ম পার্টির (ডিআরপি) ২১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। নিজেকে নির্বাহী আহ্বায়ক হিসেবে ঘোষণা দিয়ে এ কথা জানান অবসরপ্রাপ্ত মেজর আমীন আহমেদ আফসারী। খবর বিডিনিউজের।
গত ২ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবেই দলটির নাম ঘোষণা করেন শাহেদা ওবায়েদ। ‘পারিবারিক ক্রম ও দলীয়করণের বিরুদ্ধে’ অবস্থানের কথা জানিয়ে ‘গণতন্ত্র সংস্কারের’ কথা বলে এই দলটি গঠন করা হয়। সেই কমিটিতে আমীন আহমেদ ছিলেন ‘মহা সমন্বয়ক’। আড়াই মাস হতে না হতেই সংবাদ সম্মেলনে এসে আফসারী বলেন, শাহেদা ওবায়েদ আমাদের দলের ১০ জন আহ্বায়কের মধ্যে একজন আহ্বায়ক ছিলেন। আমরা যখন এই জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই দলের নাম ঘোষণা করি, সেখানে তিনি একটা বক্তব্য দিয়েছিলেন; ‘দেশে পরিবারতন্ত্র চলছে’, ‘বাংলাদেশে আমিত্ব চলছে’। তিনি এখন আমাদের দলের থেকে বেরিয়ে গিয়ে একা আহ্বায়ক হতে চান। সকল কিছু উনার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এজন্য আমরা উনাকে দলে রাখতে পারি নাই। উনি এখন আমাদের বর্তমান দলের আর কেউ নন।
তবে শাহেদা ওবায়েদ বলেন, আমার সঙ্গে উনার (আমীন আহমেদ) কোনো সম্পর্কই নেই। আমার দলের নাম গণতান্ত্রিক অধিকার পার্টি। আমরা ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছি।
আমীন আহমেদের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, তিনি কী? তিনি আগে গণফোরাম করেছেন, গণঅধিকার পরিষদ করেছেন, খোঁজ নিয়ে দেখেন সবখানে ধিকৃত হয়েছেন। আমার দল আলাদা, আমার দর্শন আলাদা, আমার লক্ষ্য আলাদা, আমার চিন্তা আলাদা। আমরা মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করতে চাই।
শাহেদা ওবায়েদ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদের মা। রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে মা–মেয়ের বিরোধ আছে। শাহেদা ওবায়েদের বিষয়ে জানতে চাইলে আমীন আহমেদ আফসারী বলেন, উনি আমেরিকাতে গিয়ে দল ঘোষণা করেছেন, আমরাও দল ঘোষণা করেছি। উনি একটা শব্দ পরিবর্তন করেছে গণতান্ত্রিক সংস্কার পার্টির জায়গায় গণতান্ত্রিক রাইটস পার্টি বা গণতান্ত্রিক অধিকার পার্টি।
শাহেদা ওবায়েদ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আবেদন করলেও আফসারী এখনো সে আবেদন করেননি। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনেই সব নয়। গ্রাসরুট লেভেলে দল তৈরি করতে হবে, জনগণকে দাঁড়াতে হবে। আমরা নির্বাচন কমিশনের গোলাম নই, জনগণের গোলাম। আমরা বড় বড় লোক আনি নাই, আমরা সাধারণ মানুষকে নিয়ে দল করতে চাই–এখানে যারা আছেন তারা সাধারণ।
প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলোকে ব্যর্থ দাবি করে তিনি বলেন, আমরা আগামী দিনগুলোতে গণতন্ত্র সংস্কার ও পুনর্গঠনে মুখ্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে চাই। আপনাদের সমর্থনে ঐক্যবদ্ধ, সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী একটি রাজনৈতিক দল আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে অত্যন্ত প্রয়োজন ও সময়ের দাবি।
আফসারী তার সংবাদ সম্মেলনে ২১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি এবং পাঁচ সদস্যের উপদেষ্টার নাম ঘোষণা করেন। নির্বাহী আহ্বায়কের নেতৃত্বে আহ্বায়করা হলেন, শামসুল আলম, মিজানুর রহমান, আফাজুল হক। ভারপ্রাপ্ত প্রধান সমন্বয়ক হচ্ছেন, মেহবুব চৌধুরী, নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ।