চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি (উপাচার্য) হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খান। রাষ্ট্রপতির অনুমাদনক্রমে আরো চার বছরের জন্য তাঁকে এ পদে নিয়োগ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের চিকিৎসা শিক্ষা-১ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ আবদুল কাদের-এর স্বাক্ষরে জারিকৃত এ আদেশ ১৪ মে, ২০২১ তারিখ থেকে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভিসি হিসেবে অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খানকে নিয়োগ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে জন্মগ্রহণ করা ইসমাইল খান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) প্রাক্তন ছাত্র। তিনি ১৯৮৪ সালে চমেক থেকে এমবিবিএস কোর্স সম্পন্ন করেন। প্রথম দফায় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব মেডিসিনের ডিনের দায়িত্বে ছিলেন।
ভিসি হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন হাতে পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খান। দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পেয়ে সবার সহযোগিতা ও সংশ্লিষ্ট সকলকে সাথে নিয়ে কাজ করার কথাও বললেন তিনি। প্রতিক্রিয়ায় অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খান গতকাল আজাদীকে বলেন, আমি চট্টগ্রামের মানুষ। চট্টগ্রামেই আমার বেড়ে ওঠা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পড়াকালীন ছাত্র রাজনীতি করেছি। পরে একই কলেজে শিক্ষকতাও করেছি। চট্টগ্রামের একমাত্র উচ্চতর চিকিৎসা-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের যে গুরু দায়িত্ব আমার উপর অর্পণ করা হয়েছে, চার বছর আমি এই গুরু দায়িত্ব পালন করেছি। এখন দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমার উপর আস্থা রাখায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা।
প্রথম চার বছরের মতো সকলকে সাথে নিয়েই আমি এই দায়িত্ব পালন করতে চাই। মোটকথা, সবার সহযোগিতায় চট্টগ্রামের একমাত্র এই উচ্চতর চিকিৎসা-শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে নিতে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে।
অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইলের জন্ম মীরসরাইয়ের মধ্যম মঘাদিয়া গ্রামের শান্তা কাজীর বাড়িতে। বাবা মরহুম মো. আকরাম খান ও মা মরহুম হোসনে আরা বেগম। মীরসরাই পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৫ সালে এসএসসি ও ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি উত্তীর্ণের পর ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে। চমেক থেকে ১৯৮৪ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৮৮ সালে চমেকে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। ফার্মাকোলজিতে এমফিল করা এ চিকিৎসক সিডনি ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস থেকে মেডিকেল এডুকেশনে (এমই) পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি নেন। দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের পাশাপাশি মালয়েশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্সে তিন বছর শিক্ষকতা করার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফার্মাকোলজি বিভাগীয় প্রধানের পাশাপশি উপাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন চার বছর। ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিলে ভিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব মেডিসিনের নির্বাচিত ডিন হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। রাজনীতিতেও সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন ইসমাইল খান। ১৯৮২-৮৩ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। সক্রিয় ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদে (স্বাচিপ)।












