একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেছেন, আমাদের দেশে কিডনি ডায়ালাইসিস অনেক ব্যয়বহুল চিকিৎসা। এর জন্য সরকারি পর্যায়ে ভর্তুকি নেই। ফলে খরচের শতভাগ রোগীদের বহন করতে হয়। গতকাল রোববার সকালে নগরীর মেহেদিবাগে সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের চট্টগ্রাম কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার মিলনায়তনে কিডনি ডায়ালাইসিসের সেবা ও সফলতার এক বছর পূর্তিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
একটি পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে সাধারণত যত কিডনি ফেইলিওর আছে, তার মাত্র ২০ শতাংশ রোগী ডায়ালাইসিস পায় বা নিতে পারে। এর মধ্যে ৫০–৬০ শতাংশ ছয় মাসের পরে আর কন্টিনিউ করতে পারে না। এই রোগীদের মধ্যে ৫ শতাংশ বা তারও কম কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট নিতে পারে। যারা সক্ষম নয়, তাদের ভিটেমাটি বিক্রি করতে হয় অথবা কারো সাহায্য নিতে হয়। এভাবে ছয় মাস থেকে এক বছর পরে ৫০–৬০ শতাংশ রোগী আর ডায়ালাইসিস চালিয়ে যেতে পারে না। এসব ক্ষেত্রে রোগীরা যদি কিছুটা সরকারি সহায়তা না পায় তাহলে কঠিন হয়।
তিনি বলেন, ডায়ালাইজার বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এগুলোর ওপর ট্যাক্স–ভ্যাট যদি কমানো যায়, তাহলে রোগীদের ব্যয় অনেক কমে আসবে। তারা বেশিদিন ডায়ালাইসিস চালিয়ে যেতে পারবে।
এম এ মালেক বলেন, বাংলাদেশে যতটা ডায়ালাইসিস সেন্টার রয়েছে, সব সেন্টারে কিছু জিনিস যদি রোগীরা ফ্রি পায়, তাহলে আরো বেশি মানুষকে সেবার আওতায় আনা যাবে। কিছু গরিব রোগীকে বিনামূল্যে সেবা দিতে হবে। প্রতিটি সেন্টারে ১০–২০ শতাংশ ডায়ালাইসিস বেড ফ্রি রাখতে হবে এ ধরনের রোগীদের জন্য। তাহলে ডায়ালাইসিসের ব্যয়ভার কিছুটা হলেও কমানো যাবে এবং বেশি রোগীকে চিকিৎসার আওতায় আনা যাবে।
সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, যতটা শুনেছি এই প্রতিষ্ঠান কম খরচে ডায়ালাইসিসের সুযোগ করে দিচ্ছে সকল রোগীকে। সব সেবার সেরা সেবা হলো মানবসেবা। মানবসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে হবে। একটা মানুষ যদি অন্যের কোনো উপকারে না আসে, সে জীবন আসলে জীবন নয়। তাই সবার উচিত যে যতটা পারে মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ডা. মতিউর রহমান খান। সোনার বাংলা ফাউন্ডেশন কুমিল্লা সেন্টারের দাতা অধ্যাপক ফারুক আহমেদ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন রোটারিয়ান অধ্যাপক তৈয়ব চৌধুরী। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনি রোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. নুরুল হুদা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নুরুল আলম চৌধুরী।