অবশেষে সংস্কারাধীন কালুরঘাট সেতুতে পর্যায়ক্রমে তিনটি ইঞ্জিনের ট্রায়াল রান সফল হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কালুরঘাট সেতুর ওপরে সংস্কার করা রেল লাইনে প্রথমে ২২০৪ ইঞ্জিন দিয়ে, দ্বিতীয় ধাপে ২৯২৫ সিরিজের ইঞ্জিন দিয়ে এবং সর্বশেষ দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করা আধুনিক উচ্চগতির হুন্দাই রোটেম কোম্পানির ৩০০৪ ইঞ্জিন দ্বারা ট্রায়াল রান সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা। এর মধ্যদিয়ে কক্সবাজার রুটে ১৫ এক্সেল লোডের ট্রেন যেতে প্রস্তুত কালুরঘাট সেতু। এই ৩০০৪ সিরিজের ইঞ্জিন দিয়েই কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১১ নভেম্বর নব নির্মিত দোহাজারী–কক্সবাজারের রেলপথে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর আগামী ১ ডিসেম্বর যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
এ ব্যাপারে প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা আজাদীকে বলেন, ট্রায়াল রানের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। কালুরঘাট সেতু ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত আছে। আজ রোববার চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ৮টি বগি ও একটি ইঞ্জিন নিয়ে প্রথম ট্রেন যাবে কক্সবাজার। এই ট্রেনে সরকারি রেল পরিদর্শক (জিআইবিআর) রুহুল কাদের আজাদের নেতৃত্বে তাদের টিমের সদস্যরা নবনির্মিত রেলপথ পরির্দশন করবেন। তারা যাত্রাপথে নবনির্মিত রেলপথ, স্টেশনসহ সব বিষয় যাচাই করে দেখবেন। এই টিমের সাথে থাকবেন পূর্বাঞ্চলের জিএম, প্রকল্প পরিচালকসহ রেলের কর্মকর্তারা।
এদিকে গতকাল বুয়েটের বিশেষজ্ঞ পরামর্শক দল ও রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলীদের উপস্থিতিতে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত তিনটি রেল ইঞ্জিন চালিয়ে সেতুর সেতুর উপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের সক্ষমতা যাচাই করা হয়। গতকাল প্রথম ২২০৪ ইঞ্জিন নিয়ে প্রথম ট্রায়াল দেন লোকোমাষ্টার মীর এ বি এম শফিকুল আলম ও সহকারী লোকো মাষ্টার মোঃ কামরুল ইসলাম। এরপর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপে ২৯২৫ সিরিজের ইঞ্জিন দিয়ে এবং ৩০০৪ ইঞ্জিন দ্বারা ট্রায়াল দেন লোকোমাস্টার মাজফুজুর রহমান ও সহকারী লোকোমাস্টার রোকন মিয়া। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ট্রায়াল দেয়ার জন্য কালুরঘাট সেতু এলাকায় ইঞ্জিন গিয়েও ফেরত আসে। বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল ঐদিন সেতুতে ইঞ্জিন চালানোর অনুমতি দেননি। তারা ঐসময় সেতুতে আরো কিছু কাজের অপশন দেন। সেগুলো শুক্রবারের মধ্যে শেষ করার তাগিদ দেন। বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দলের পরামর্শ মত সকল কাজ শেষ করে গতকাল সেতুর উপর পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হয়।
প্রসঙ্গত, শতবর্ষী কালুরঘাট সেতুর মেরামতের জন্য গত ১ আগস্ট থেকে বন্ধ করে সংস্কার কাজ শুরু হয়।
দোহাজারী–কক্সবাজার রেল লাইনের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী আজাদীকে বলেন, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার রেল ট্র্যাক বসানো হয়েছে। কক্সবাজার আইকনিক ভবনসহ বেশ কয়েকটি ভবনের কাজ শেষ হয়েছে। রবিবার সকালে আমাদের রেলওয়ের পরিদর্শন টিমের সদস্যরা পরিদর্শন করবেন। আমাদের যে কোনো নতুন প্রকল্পের কাজ শেষে পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা পরির্দশন করে ক্লিয়ারেন্স দেন। কক্সবাজার দৃষ্টিনন্দন আইকনিক স্টেশন বিল্ডিংয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোর এবং দ্বিতীয় তলা একেবারে রেডি। এখন থেকে অপারেশন কাজ চলবে। অপারেশন কাজের সকল ধরনের কার্যক্রম এখন থেকে চলবে। এদিকে দোহাজারী, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ, রামু স্টেশনের কাজ শেষ হয়েছে। আর কিছু স্টেশনের কাজ চলমান আছে।