ট্রাম্পের শুল্কের জবাবে চীনের ৫ চাল

| শুক্রবার , ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৭:০৪ পূর্বাহ্ণ

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর চীনের ওপর যে শুল্ক আরোপ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যুৎসই জবাব হাজির করে বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যকার বাণিজ্য যুদ্ধ আরও তীব্র করে তুলেছে চীন। দেশটি থেকে সব আমদানি পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক বসিয়ে এই দফার মল্লযুদ্ধ উসকে দেয় দুই সপ্তাহ আগে দায়িত্ব নেওয়া নতুন মার্কিন প্রশাসন। খবর বিডিনিউজের।

এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা সুনির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক যেমন দিয়েছে বেইজিং, তেমনি নিয়েছে আরও কিছু পদক্ষেপ। পাল্টাপাল্টি অবশ্য নতুন নয়। দুই দেশের মধ্যে ২০১৮ সাল থেকে চলে আসা বাণিজ্য বিরোধের ফলে এর আগেও অসংখ্য পণ্যের ওপর শুল্কের খড়গ পড়েছিল, অনেক পণ্যে নতুন মাশুল যুক্ত করার হুমকিও আছে। ট্রাম্প বলছেন, এই বিরোধের অবসানে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করার পরিকল্পনা করছেন। তবে বেইজিং যদি আগামী সোমবার থেকে পরিকল্পনা অনুযায়ী তার পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখানো শুরু করে, তাহলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এর কী প্রভাব পড়বে তা এখনো স্পষ্ট নয়, বলছে বিবিসি।

কয়লা, তেল ও গ্যাস : ট্রাম্পের শুল্কের পাল্টায় চীন মার্কিন কয়লা, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ও অপরিশোধিত তেলের ওপর আমদানি শুল্ক বসিয়েছে। এর ফলে চীনের যেসব কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের এসব পণ্য আমদানি করবে তাদেরকে কয়লা ও এলএনজির জন্য ১০ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেলের জন্য ১৫ শতাংশ কর দিতে হবে। চীন বিশ্বের বৃহত্তম কয়লা আমদানিকারক হলেও দেশটি মূলত ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করেই তার চাহিদার সিংহভাগ মেটায়। রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া আর মঙ্গোলিয়া থেকেও তারা কিছু কয়লা নেয়।

কৃষি সহায়ক যন্ত্রপাতি, পিকআপ ট্রাক ও বড় গাড়ি : জ্বালানি পণ্যের পাশাপাশি চীন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি সহায়ক যন্ত্রপাতি, পিকআপ ট্রাক ও কিছু বড় গাড়ির ওপরও ১০% শুল্ক আরোপ করেছে। চীন মার্কিন পিকআপ ট্রাকের বড় আমদানিকারক নয়। দেশটির বেশিরভাগ গাড়ি ইউরোপ এবং জাপান থেকে আসে। তাই মার্কিন পিকআপ ট্রাকের ওপর ১০% শুল্কের ফলে চীনা ভোক্তাদের খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

গুগলের বিরুদ্ধে তদন্ত : মার্কিন টেক জায়ান্ট গুগলের বিরুদ্ধে একচেটিয়া ব্যবসা চালানোর অভিযোগ খতিয়ে দেখারও ঘোষণা দিয়েছে চীন। কীভাবে এই তদন্ত হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। এদিকে ২০১০ সাল থেকে চীনে গুগলের সার্চ সেবা বন্ধ রয়েছে। দেশটিতে গুগলের কিছু কার্যক্রম এখনও চলমান। স্থানীয় ডেভেলপারদের সঙ্গে তারা যৌথভাবে গেইমস ও অ্যাপ্লিকেশন সরবরাহ করে যাচ্ছে।

ক্যালভিন ক্লেইন অনির্ভরযোগ্য কোম্পানির তালিকায় : কেলভিন ক্লেইন ও টমি হিলফিগারের মতো ডিজাইনার ব্যান্ডের মালিক মার্কিন প্রতিষ্ঠান পিভিএইচকে কথিত অনির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে চীন। কোম্পানি চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের। বিরল ধাতু রপ্তানিতে কড়াকড়ি : চীন ২৫টি বিরল ধাতুর রপ্তানিতেও কড়াকড়ি আরোপ করেছে, এর মধ্যে কিছু ধাতু ইলেকট্রনিক পণ্য ও সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাজাবাসীদের স্থানান্তর হবে সাময়িক : মার্কো রুবিও
পরবর্তী নিবন্ধগাজায় জাতিগত নির্মূলের বিরুদ্ধে ট্রাম্পকে সতর্ক করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব