ট্রাম্পের তোপের মুখে জাতিসংঘ

যুদ্ধ, নোবেল, অভিবাসন ও জলবায়ু নিয়ে যা বললেন

| বুধবার , ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৯:৩০ পূর্বাহ্ণ

জাতিসংঘে নির্ধারিত ১৫ মিনিটের জায়গায় প্রায় এক ঘণ্টার ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন ইস্যুতে এমন সব মন্তব্য করেছেন যা মুহূর্তেই নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তার ভাষণে জাতিসংঘের উপযোগিতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। অভিবাসন ও জলবায়ু ইস্যুতে ‘পলিটিক্যালি কারেক্ট’ থাকার ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন ইউরোপকে। কথা বলেছেন ইউক্রেন, ইরান, গাজাসহ বিবদমান বিভিন্ন বিষয়ে। ট্রাম্প দাবি করেছেন অন্তত সাতটি যুদ্ধ তিনি বন্ধ করেছেন যার ‘প্রত্যেকটিই হয়তো একটি করে নোবেল পাওয়ার মত’ কাজ। তিনি বলেছেন, বর্তমানে আমেরিকা তার স্বর্ণযুগ অতিক্রম করছে। চলমান সংঘাতের প্রসঙ্গে টেনে, ইউক্রেন যুদ্ধকে সবচেয়ে সহজে সমাধানযোগ্য বলে মন্তব্য করেন তিনি। গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে তার মন্তব্য, যুদ্ধ শেষ করতেই হবে, এবং জিম্মিদেরও মুক্তি দিতে হবে। বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী দেশ যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে তা হামাসের নৃশংসতার জন্য একটি পুরস্কার বলেও মন্তব্য করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প ২০২০ সালের পর এই প্রথম নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিয়েছেন।

বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে প্রথমেই ট্রাম্প উল্লেখ করেন যুক্তরাজ্যের কথা। ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করা প্রথম দেশ যুক্তরাজ্য। এর পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোসহ জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম এবং আরও অনেক অনেক দেশ এই কাতারে আছে বলে জানান ট্রাম্প। তিনি বলেন, আমেরিকা আবার সম্মানিত হয়েছে, যেমন সম্মান তারা আগে কখনও পায়নি। বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কৃতিত্ব দাবি করার আগে ট্রাম্প পশ্চিমা সামরিক জোট নেটো সদস্য দেশগুলোর প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপি’র ২% থেকে ৫% বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করে বলেন, তার অনুরোধেই এটি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র উপসাগরীয় অঞ্চলে সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) সঙ্গে অংশীদারিত্ব জোরদারে কাজ করছে বলে জানান তিনি। খবর বিবিসি বাংলা ও বিডিনিউজের। এরপর ট্রাম্প জাতিসংঘের সমালোচনা করেন। জাতিসংঘের যতটুকু সম্ভাবনা আছে সেই পর্যায়ে এই আন্তর্জাতিক সংস্থাটি কাজ করতে পারছে না বলে উল্লেখ করেন তিনি। জাতিসংঘ সদর দপ্তরের ভাঙা এসকেলেটর ও টেলিপ্রম্পটার নিয়েও অভিযোগ করে ট্রাম্প বলেন, জাতিসংঘের কাছ থেকে আমি দুটি জিনিস পেয়েছি, তা হল একটি ভাঙা এসকেলেটর আর একটি খারাপ টেলিপ্রম্পটার।

জাতিসংঘের কার্যকারিতা নিয় প্রশ্ন রেখে ট্রাম্প বলেন, জাতিসংঘের উদ্দেশ্য কি? তারা এমনকি তাদের যে সম্ভাবনা আছে তার ধারেকাছেও আসতে পারছে নাতাদের বুলি ফাঁকা, ফাঁকা বুলিতে যুদ্ধের সমাধান হয় না। জাতিসংঘ এখানে আমাদের জন্য নেই। যুদ্ধ সমাধানের আলোচনায় জাতিসংঘ নেই বরং তিনিই যুদ্ধের সমাধান করেছেন বলে ট্রাম্প দাবি করেন। জাতিসংঘ এমনকি যুদ্ধ বিশ্বে সংঘাত বন্ধে সহায়তা করারও চেষ্টা করেননি বলে বক্তব্য তার। ভাষণে ট্রাম্প বলেন, বিশ্বে সাতটি সংঘাতের অবসান ঘটেছে খোদ তার নেতৃত্বে। এর মধ্যে রয়েছেকম্বোডিয়াথাইল্যান্ড, কসোভোসার্বিয়া, পাকিস্তানভারত, ইসরায়েলইরান, মিশরইথিওপিয়া, আর্মেনিয়াআজারবাইজান এবং কঙ্গো গণপ্রজাতন্ত্ররুয়ান্ডার যুদ্ধ। অন্য কোনো প্রেসিডেন্ট এমন কিছু করতে পারেননি, বলেন ট্রাম্প। ওদিকে, গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আলোচনার পক্ষগুলোকে এবার চুক্তি করতেই হবে। সমপ্রতি কয়েকটি শক্তিশালী দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্টের স্বীকৃতি দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি সতর্ক করেন, এটি হামাসের নৃশংসতার পুরস্কার। ট্রাম্পের কথায়, হামাসের মুক্তিপণ দাবির কাছে মাথা নত না করে বরং যারা শান্তি চায় তাদের সবাইকে এখন এক হয়ে একটি বার্তা দেওয়ার জন্যই সোচ্চার হতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৫০ বছর পর প্রথম চাঁদে মানুষ পাঠাতে নাসার অভিযান ফেব্রুয়ারিতে
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশখালীতে ভোলানাথ ধামকে ঘিরে গুজব, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক পদক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক