কক্সবাজারের টেকনাফ–সেন্টমার্টিন নৌ রুটের যাত্রী ও খাদ্যপণ্যবাহী সকল নৌ–যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে খাদ্য সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যায় পড়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা। দ্বীপের মানুষের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন এবং সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ কোথাও আসা–যাওয়ার সুযোগ নেই। যারা গোলাগুলির আগে দ্বীপ থেকে বাইরে কাজে এসেছেন তারা ৩–৪ দিন ধরে দ্বীপে যেতে না পেরে অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। সমাধান না হওয়ায় আপাতত অনেকেই টেকনাফে আত্মীয়–স্বজনদের বাড়িতে অবস্থান করছে।
স্থানীয়রা জানান, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে নাফনদীর মোহনা শেষে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা পার হওয়ার সময় মিয়ানমার প্রান্ত থেকে দ্বীপে যাতায়াত করা ট্রলারগুলোকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হচ্ছে। যার কারণে মানুষ প্রাণের ভয়ে পারাপার করতে চাচ্ছে না। তবে গুলি কি মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ছুড়ছে? নাকি বিদ্রোহীরা ছুড়ছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি কেউ। গত কয়েক দিনে ২–৩টি ট্রলারে এ রকম আক্রমণ চালানো হলে ট্রলার চলাচল বন্ধ করে দেন মালিকরা।
এদিকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নের ফলে সেন্টমার্টিনে দেখা দিচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য সংকট। দ্বীপে বসবাসরত ১০ হাজারের অধিক বাসিন্দার মধ্যে যারা দিনে এনে দিনে খায় আপাতত কষ্টে বেশি পড়েছে তারাই। খাদ্য ও পণ্যবাহী বোট চলাচল করতে না পারায় সেন্টমার্টিনের দোকানগুলোতে যেমন মজুদকৃত খাদ্য পণ্য শেষ হতে চলেছে তেমনি সে সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পণ্যের দাম দ্বিগুণ নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দ্রুত সমাধান না হলে দ্বীপবাসীর জন্য খাদ্য, চিকিৎসাসহ অন্যান্য সমস্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, দ্বীপে আসার পথে নাইক্ষ্যংদিয়া সীমান্ত থেকে সেন্টমার্টিনগামী নৌ যানের উপরে মিয়ানমার থেকে গুলি ছোড়ার কারণে গত ৩ দিন ধরে সেন্টমাটিন–টেকনাফ যাত্রী ও পণ্যবাহী সব নৌ যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। যার কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য–পণ্য সংকট হচ্ছে। সমাধান না হলে দ্বীপবাসীর অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন হয়ে যাবে। সমস্যা দীর্ঘ হওয়ার আগে যেন সরকারিভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হয় সে কামনা করেন তিনি।
সেন্টমার্টিন বোট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ জানান, বোটে প্রকাশ্যে গুলি করতে দেখে মানুষ ভয়ে যাচ্ছে না। তা ছাড়া ওই পথ ছাড়া সেন্টমার্টিনে আসার বিকল্প কোনো ব্যবস্থা বা রুটও নেই। প্রতিদিন সেন্টমার্টিন–টেকনাফ নৌ রুটে ৬–৭টি বোটের মাধ্যমে শতাধিক মানুষ আসা যাওয়া করার পাশাপাশি খাদ্য ও নিত্যপণ্য বহন করা হয়।
টেকনাফ উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানান, এ বিষয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, নাফ নদীর পয়েন্টে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে শাহপরীর দ্বীপ থেকে সেন্টমার্টিনে যাওয়ার বিকল্প রুট ব্যবহার করা হবে।