টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশড বাংলাদেশের মেয়েরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৭:৩২ পূর্বাহ্ণ

ওয়ানডেতে দুর্দান্ত বাংলাদেশ নারী দল টিটোয়েন্টিতে এসে মুখ থুবড়ে পড়ল। ওয়ানডেতে হোয়াইট ওয়াশ হওয়া আইরিশ নারীরা টিটোয়েন্টিতে নিল মধুর প্রতিশোধ। সিরিজের শেষ টিটোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৪ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয়ে ৩০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল আয়ারল্যান্ড। মিরপুরে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হয়েছিল তারা। সিলেটে টিটোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশড বাংলাদেশ। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে গতকাল সোমবার যথারীতি বাংলাদেশের ব্যাটিং ছিল হতাশাজনক। যে দলের রান ছুটছিল দেড়শর পথে, শেষ দিকে পথ হারিয়ে সেই দল আটকে যায় ১২৩ রানে। রান তাড়ায় একসময় অনায়াসেই এগোচ্ছিল আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশ পরে ঘুরে দাঁড়ায় দারুণভাবে। কিন্তু শেষ ওভারে দুটি ক্যাচ হাতছাড়া করে ম্যাচও বেরিয়ে যায়। শেষ ওভারে আয়ারল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। নারী ক্রিকেটের বাস্তবতায় কাজটা খুবই কঠিন। আগের দুই ওভারে ৯ রান দেওয়া লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার স্বর্ণার ওপর শেষের ভার দেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা। প্রথম বলে দ্বিতীয় রান নেওয়ার চেষ্টায় রান আউট হয়ে যান আর্লিন কেলি। পরের বলে জীবন পেয়ে দুটি রানও পান ডেলানি। তৃতীয় বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে বোলারের মাথার ওপর দিয়ে চার মারেন তিনি। পরের বলটি আবার ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে দারুণ শটে কাভার দিয়ে চার মারেন অভিজ্ঞ আইরিশ ব্যাটার। বাংলাদেশের সম্ভাবনা জিইয়ে ছিল এরপরও। কিন্তু পঞ্চম বলে আবার জীবন পেয়ে ডেলানির বাউন্ডারিতে নাটকীয় জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে আইরিশরা। ওই ডেলিভারির আগে লং অফ থেকে রিতু মনিকে সরিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসকে আনা হয়। ক্যাচ নিতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে খেলা এই ক্রিকেটারও।

আইরিশদের রান তাড়ার শুরুটাও ছিল দারুণ। পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪৭ রান তোলে এমি হান্টার ও গ্যাবি লুইস। ২৪ বলে ২৮ রান করে হান্টারের বিদায়ে ভাঙে ৫৫ রানের উদ্বোধনী জুটি। পরের ওভারে আইরিশ অধিনায়ক গ্যাবি লুইসকে বিদায় করেন লেগ স্পিনার রাবেয়া খান। এরপর রান আটকে ও দ্রুত আরও উইকেট নিয়ে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ঝড় তোলা লিয়া পল এবার শূন্যতেই রান আউট হন মুর্শিদা খাতুনের থ্রোয়ে। আইরিশদের বড় ভরসা ওর্লা প্রেন্ডারগাস্ট ১১ রান করে সীমানায় ধরা পড়েন রাবেয়ার বলে। ১৫ রানের মধ্যে ৪ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। ডেলানি ও রেবেকা স্টোকেল সেখান থেকে জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নেন কিছুটা। তবে রান রেটের চাপ বাড়ছিলই। দুই ওভারে যখন প্রয়োজন ২১ রান, নাহিদার বলে বোল্ড হয়ে যান স্টোকেল। ১৯ রান করতে ২২ বল খেলেন তিনি। নাহিদার ওই ওভার থেকে আসে কেবল ৬ রান। বাংলাদেশ তখন প্রবলভাবেই ফেভারিট। কিন্তু শেষ ওভারে ডেলানির দারুণ ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের বাজে ক্যাচিংয়ে কঠিন সমীকরণ মিলিয়ে ফেলে আইরিশরা। ম্যাচের প্রথম ভাগেও এমন হতাশার গল্প আছে বাংলাদেশের। শুরুটা যদিও ছিল আশা জাগানিয়া। উদ্বোধনী জুটিতে ৪ ওভারে ৩৩ রান তোলেন সোবহানা মোস্তারি ও মুর্শিদা খাতুন। ১২ বলে ১২ করে মুর্শিদা আউট হওয়ার পর দারুণ এক জুটি গড়েন সোবহানা ও শারমিন আক্তার। ফর্মে থাকা দুই ব্যাটার যোগ করেন ৫৮ বলে ৭১ রান। ১১ ওভারে দলের রান ছিল ৮৭। এরপর একটু ক্লান্ত হয়ে পড়েন দুই ব্যাটার। তার পরও দেড়শ রানের পথে ছিল বাংলাদেশ। চতুর্দশ ওভারে শারমিন স্টাম্পড হন ৩৩ বলে ৩৪ রান করে। একটু পর টানা চার বলে রান না করতে পেরে শেষ পর্যন্ত সোবহানা আউট হন ৪৩ বলে ৪৫ রান করে। পরের দিকের কোনো ব্যাটার পরিস্থিতির দাবি মেটাতে পারেননি। ১৭ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ পারেনি ১২৫ রান করতেও। তার পরও ম্যাচ জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু নিজেদের পায়ে কুড়াল মারলে রক্ষা করবে কে। প্লেয়ার অব দ্যা ম্যাচ হয়েছেন লরা ডেলানি। প্লেয়ার অব দ্যা সিরিজ হয়েছেন ওর্লা প্রেন্ডারগাস্ট।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করলেন জ্যোতি
পরবর্তী নিবন্ধসমতা ফেরানোর লক্ষ্যে আজ দ্বিতীয় ম্যাচে নামছে বাংলাদেশ